গরিবদের বাড়ি তৈরির আশ্বাস দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত কোন্নগর পুরসভার বরখাস্ত হওয়া আর এক কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরপাড়ার বি কে স্ট্রিট থেকে তপন ভাদুড়ি ওরফে কাবুল নামে ওই অভিযুক্তকে ধরা হয়। তিনি কোন্নগর পুরসভার পিওন পদে কাজ করতেন।
কয়েক মাস আগে ‘বেসিক সার্ভিসেস ফর আরবান পুওর’ (বিএসইউপি) প্রকল্পে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে গরিব মানুষদের কাছ থেকে প্রচুর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে ওই কোন্নগর পুরসভার কর্মী তপন এবং শ্যামল রায়ের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হতে পুরসভার অন্দরে হইচই পড়ে যায়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই দু’জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়। দু’জনকেই পুরসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা এবং অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। সেই সময় দু’জনেই উধাও হয়ে যায়।
দিন দশেক আগে নদিয়া থেকে শ্যামলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তপনের নাগাল মিলছিল না। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, এত দিন তপন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। শিলিগুড়ি, তারাপীঠ, কল্যাণী, বর্ধমানে গা-ঢাকা দেন। মাস খানেক ধরে উত্তরপাড়ায় থাকছিলেন। সব জায়গাতেই তিনি বাড়ি ভাড়া করছিলেন। কার থেকে কত পরিমাণ টাকা তোলা হয়েছে, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। ওই ঘটনায় আর কেউ যুক্ত কিনা, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে। তপনকে শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ৫ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
গোটা ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলগুলি সরব হয়েছে। হুগলি জেলা বিজেপি সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দু’জন অত্যন্ত সাধারণ কর্মীর পক্ষে এমন কাজ করা অসম্ভব। এর পিছনে নির্ঘাত শাসক দলের লোকজন রয়েছেন। তাঁদের আড়াল করা হচ্ছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই দু’জন যদি এমন কাজ করতে পারে, তবে পুর-প্রশাসনকে মেনে নিতে হবে, তাঁদের সিস্টেমে ছিদ্র রয়েছে।’’
পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরে তৎক্ষণাৎ আমি এফআইআর করেছি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রশাসনিক দফতরেও চিঠি দিয়েছি। এর পিছনে যে-ই থাকুক না কেন, তারা গ্রেফতার হোক। গরিবদের সঙ্গে যারা প্রতারণা করেছে, আইনের মুখোমুখি হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy