শরীর-স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ঘড়ি ধরে খাচ্ছেন, তেল-মশলা, ভাজাভুজি এড়িয়ে চলছেন। কিন্তু তার পরেও পেটের সমস্যা পিছু ছাড়ছে না! কখনও পেট ভার, কখনও আবার অম্বল!
আরও পড়ুন:
কলকাতার পুষ্টিবিদ নিকিতা বরদিয়া সমাজমাধ্যমে এমনই সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘লোকে ভাবেন বাইরের খাবার খেলেই পেটের সমস্যা হয়। কিন্তু তা নয়, ঘরের খাবার খেলেও পেটের স্বাস্থ্য নষ্ট হতে পারে। খুব সাধারণ খাবার খেয়েও বদহজম, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।’’
কোন কারণে এমন সমস্যা হতে পারে?
স্যালাড: স্যালাড খাওয়া ভাল। বিশেষত ডায়াবেটিকদের খাওয়ার আগে স্যালাড খেতে বলা হয়। অনেকেই মূল খাবারে স্যালাড খান। নিকিতার মতে, নৈশ আহারে পেট ভরাতে বাটি বাটি স্যালাড খেয়ে ফেললে, তার জেরে ভুগতে হতে পারে। পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাঁর পরামর্শ রাতে কাঁচা স্যালাড নয়, বরং হালকা ভাপানো স্যালাড কিংবা সেদ্ধ সব্জি খাওয়া যেতে পারে। তাও যেন পরিমিত হয়।
ডাল: অনেক সময় তাড়াহুড়োয় ডাল, রাজমা, ছোলা ভেজানোর কথা মনে থাকে না। শেষ মুহূর্তে প্রেশার কুকারে বাড়তি সিটি দিয়ে ডাল রান্না করে ফেলা হয়। কিন্তু ডাল ভিজিয়ে না রাখলে ফাইটিক অ্যাসিড এবং ওলিগোস্যাকারাইড তৈরি হয়। তার ফলে হজমের সমস্যা হতে পারে। তাঁর পরামর্শ, ছোলা, মটর, রাজমার মতো ডাল অন্তত ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
রাগি:যাঁরা স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন, তাঁরা অনেকেই রুটি বা ভাতের পরিবর্তে জোয়ার, বাজরা, রাগি খাচ্ছেন। কেউ মিলেট খাচ্ছেন ভাতের বদলে। কেউ বাজরা বা রাগির আটার রুটি খাচ্ছেন। এগুলি স্বাস্থ্যকর ঠিকই, কিন্তু এতে অনেকটা ফাইবারও থাকে। ফলে, খাবারের মাত্রা বেশি হলে হজমের গোলমাল হতেই পারে।
ছাস, লস্যি: অম্বলের ধাত রয়েছে। শরীর ঠিক নেই। এমন অবস্থায় কিন্তু ছাস বা লস্যি খেলে পেটের ভাল হবে না। উল্টে তা থেকে অম্বল হতে পারে। বিশেষত চিনি দিয়ে লস্যি খেলে অম্বলের সম্ভবনা আরও বাড়ে। সুস্থ অবস্থায় অবশ্য তা খাওয়া যায়। অম্বল এড়াতে হলে চিনির মাত্রা কম দেওয়াই ভাল।
চা-কফি: চা-কফি খাওয়ায় সমস্যা নেই, কিন্তু কী ভাবে খাওয়া হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম থেকে উঠে চা ছাড়া দিন শুরু হয় না অনেকের। সকালে উঠেই দুধ-চিনি দিয়ে চা খেলে অম্বল হতেই পারে। একই কথা খাটে কফির ক্ষেত্রেও। পুষ্টিবিদের পরামর্শ, খালিপেটে নয়, বরং প্রাতরাশের পর চা-কফি খাওয়া ভাল। তা ছাড়া, সকালে দুধ-চিনি এড়িয়ে চলা দরকার। কফি খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে জল খান এবং খানিক পরেও জল খাওয়া দরকার। এতে পেট ফাঁপার সমস্যা কমে।