Advertisement
E-Paper

দাদু নেই, কাকে ফোঁটা দেব? কাঁদছে অন্তরা

দাদা নেই, ভাই নেই। চন্দননগরের বুড়োশিবতলার একরত্তি মেয়েটা প্রথম থেকে ঠাকুরদাকেই ভাইফোঁটা দিত। ‘দাদু’ তাকে উপহার দিতেন নতুন জামা, সুন্দর পেন, ব্যাগ, চকোলেট... আরও কত কী!

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪৯
দাদুর ছবি আঁকড়ে অন্তরা। —নিজস্ব চিত্র।

দাদুর ছবি আঁকড়ে অন্তরা। —নিজস্ব চিত্র।

এ বছরও ভাইফোঁটায় কোনও উপহার পেল না অন্তরা।

এ বারও খাওয়া হল না মাংস, ভাত, মিষ্টি, ক্যাডবেরি।

এ বারও আশপাশে বাড়িতে যখন শাঁখ বাজছে, তখন ১০ বছরের অন্তরার চোখে জল।

দাদা নেই, ভাই নেই। চন্দননগরের বুড়োশিবতলার একরত্তি মেয়েটা প্রথম থেকে ঠাকুরদাকেই ভাইফোঁটা দিত। ‘দাদু’ তাকে উপহার দিতেন নতুন জামা, সুন্দর পেন, ব্যাগ, চকোলেট... আরও কত কী! কিন্তু দু’বছর ধরে সব বন্ধ। নোটবন্দির সিদ্ধান্ত কেড়ে নিয়েছে তার ‘দাদু’কে। তাই মাঝেমধ্যেই বাবা-মায়ের হাতে নতুন ৫০০ বা ২০০০ টাকার নোট দেখলেই অন্তরা বলে ওঠে, ‘‘এই টাকাটা না-বেরোলে হয়তো দাদু বেঁচে থাকত!’’

অন্তরার ‘দাদু’ অনিল ঘোষ। ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর দুপুরে ডাকঘরে পুরনো ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বদল করতে যান। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ৭৭ বছরের ওই বৃদ্ধের। ওই বছরেরই ৮ নভেম্বর রাতে পুরনো নোট বদলের নির্দেশ জারি হয়েছিল। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে থাকা কিছু পুরনো নোট নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন অনিলবাবু। বারকয়েক ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরে লাইন দিয়েও নোট বদল করতে না-পেরে ফিরে এসেছিলেন। ২১ নভেম্বর ডাকঘরে তুলনায় কম ভিড় থাকায় লাইনে অপেক্ষা করছিলেন অনিলবাবু। তখনই ওই ঘটনা।

‘দাদু’ আর নেই, এ কথা জানতে পেরে সে দিন থ হয়ে গিয়েছিল অন্তরা। দেখতে দেখতে দু’বছর পার। গত বছর সে কাউকে ভাইফোঁটা দিতে পারেনি। এ বারও পারল না। শুধু ‘দাদু’র ছবি কোলে নিয়েই তার দিন কাটল। অন্তরার বাবা সাধনবাবু বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে এই দিনটায় মেয়েটার দিকে তাকাতে পারি না। খালি কাঁদে।’’

কাঁদতে কাঁদতেই অন্তরার আকুল প্রশ্ন, ‘‘আমি আর কাকে ভাইফোঁটা দেব? কে আমাকে জামা দেবে?’’

Chandannagar Bhai dooj চন্দননগর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy