Advertisement
E-Paper

জগাছায় অপমৃত্যু ‘১০৩’ বছরের বৃদ্ধের

কোমরে লোহার তার পেঁচানো সম্পূর্ণ দগ্ধ দেহটা উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে মেঝেতে। তারের অন্য প্রান্ত বাঁধা জানলার গ্রিলে। পাশেই পড়ে আছে একটি ফাঁকা কেরোসিনের জার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৫ ০০:২৪

কোমরে লোহার তার পেঁচানো সম্পূর্ণ দগ্ধ দেহটা উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে মেঝেতে। তারের অন্য প্রান্ত বাঁধা জানলার গ্রিলে। পাশেই পড়ে আছে একটি ফাঁকা কেরোসিনের জার।

বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ হাওড়ার জগাছা এলাকার ঘরামিপাড়ায় একটি দোতলা বাড়ির রান্নাঘর থেকে এমনই অবস্থায় এক বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম কালীপদ রায়। বয়স ‘১০৩’ বছর। কর্মজীবনে পূর্ব রেলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন কালীপদবাবু। তিন বছর আগে বাড়িতে ধুমধাম করে তাঁর শততম জন্মদিনও পালন করেছিলেন আত্মীয়-প্রতিবেশীরা। কিন্তু হঠাৎ করে কী কারণে শতবর্ষ পেরোনো এক ব্যক্তির এ ভাবে মৃত্যু হল, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ জানায়, বিপত্নীক কালীপদবাবুর সঙ্গে থাকতেন নাতি কৌশিক সেনগুপ্ত ও সাবিত্রী মিশ্র নামে এক প্রৌঢ়া আয়া। সাবিত্রীদেবী ১৭ বছর ধরে কালীপদবাবুর দেখভাল করছেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার সময়ে দু’জনেই বাড়ির বাইরে ছিলেন বলে জানিয়েছেন।

সাবিত্রীদেবী পুলিশকে জানান, অশান্তির জেরে কয়েক দিন ধরে তিনি ওই বাড়িতে না থেকে পাড়াতেই আর এক জনের বাড়িতে থাকছিলেন। এ দিন সকালে পাড়ার লোকজনই তাঁকে জানান, কালীপদবাবু গত দু’দিন ধরে খেতে পাননি। তার পরেই সাবিত্রীদেবী ওই বাড়িতে এসে চাল কিনতে যান। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, সে সময়ে কালীপদবাবুর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা ছিল না।

সাবিত্রীদেবী এ দিন বলেন, ‘‘মিনিট দশেক পরে দোকান থেকে ফিরে দেখি, দোতলার রান্নাঘর থেকে কাপড়-পোড়া গন্ধ ও ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ছুটে রান্নাঘরে গিয়ে দরজা ঠেলে দেখি, কালীপদবাবুর সারা শরীর জ্বলছে।’’ আতঙ্কিত সাবিত্রীদেবীই পাড়ার লোকজনকে খবর দেন। আসে জগাছা থানার পুলিশও। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় কালীপদবাবুকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তারেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, কয়েক দিন ধরেই ওই বাড়ি থেকে খুব ঝগড়াঝাঁটির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল বলে তাঁদের জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। মঙ্গলবার রাতেও একই ঘটনা ঘটে। তার পরেই এ দিন কালীপদবাবুর দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তকারীরা তাই তিনটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন। প্রথমত, কার সঙ্গে কী নিয়ে অশান্তি হচ্ছিল? দ্বিতীয়ত, এর পিছনে সম্পত্তিঘটিত কোনও বিবাদ আছে কি না এবং তৃতীয়ত, সম্পত্তি নিয়ে ভাগ-বাঁটোয়ারার জেরেই কালীপদবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন, না তাঁকে খুন করার পরে পুড়িয়ে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে?

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঠিক কী কারণে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। মৃতদেহ সৎকার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কৌশিকবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেই পুরো ঘটনা পরিষ্কার হবে।’’

Jagacha suicide koushik sengupta sabitri misra howrah city police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy