Advertisement
E-Paper

প্রাচীন ১৩টি মন্দির সংস্কারের ছাড়পত্র মিলল

গোঘাট ১ ব্লকের বিডিও সুরশ্রী পাল বলেন,  “নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছে।” একই কথা বলেছেন গোঘাট ২ বিডিও অভিজিৎ হালদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৫:১০
ঐতিহ্য: গোঘাটের বালিতে রাউতপাড়া দুর্গামন্দির। কামারপুকুরে হরিসভা মাণিকরাজা শিবমন্দির। বালির হালদারপাড়ার শিবমন্দির।  কামারপুকুরে পাইন বাড়ির বিষ্ণুমন্দির। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

ঐতিহ্য: গোঘাটের বালিতে রাউতপাড়া দুর্গামন্দির। কামারপুকুরে হরিসভা মাণিকরাজা শিবমন্দির। বালির হালদারপাড়ার শিবমন্দির।  কামারপুকুরে পাইন বাড়ির বিষ্ণুমন্দির। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

গোটা গোঘাট জুড়েই অবহেলিত, ধ্বংসপ্রায় প্রাচীন স্থাপত্যের দেবদেবীর মন্দির ছড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয় মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ওইসব দুর্লভ পুরাকীর্তির সংস্কার এবং সংরক্ষণের দাবি করে আসছেন। বিশেষজ্ঞ পরিদর্শকরাও বহুবার সুপারিশ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি মন্দির সংস্কারের দাবিতে গত বছর তিন ধরে বিধানসভা অধিবেশনে সোচ্চার ছিলেন গোঘাট বিধায়ক তৃণমূলের মানস মজুমদার। অবশেষে তাঁর সুপারিশ করা ১৩টি মন্দির সংস্কারের ছাড়পত্র দিল রাজ্য পর্যটন দফতর। ১৭ জুলাই পর্যটন দফতর থেকে ওই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয় হুগলি জেলা প্রশাসনে। জেলা প্রশাসন থেকে মঙ্গলবার(২৮ জুলাই) সংশ্লিষ্ট প্রাচীন মন্দিরগুলি সংস্কারের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রচনা করে পাঠাতে বলা হয়েছে গোঘাটের দুই ব্লকের বিডিওদের। গোঘাট ১ ব্লকের বিডিও সুরশ্রী পাল বলেন, “নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছে।” একই কথা বলেছেন গোঘাট ২ বিডিও অভিজিৎ হালদার।

দীর্ঘ দিনের দাবি মেটার আশায় খুশি স্থানীয় মানুষ। বিধায়ক মানসবাবু বলেন, “গোঘাটের ২০০ থেকে ৫০০ বছরের প্রাচীন মন্দির এবং মাজারগুলো বছরের পর বছর সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এগুলির সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্থানীয় মানুষের আবেগ। এগুলো সংস্কার হলে গোঘাট পর্যটন মানচিত্রে আলাদা জায়গা করে নিতে পারবে।” তিনি আরও জানান, মন্দিরগুলি ছাড়াও ৫টি প্রাচীন মাজার সংস্কারেরও দাবি জানানো হয়েছে। দ্রুত ছাড়পত্র মিলবে বলেই তাঁর আশা।

এই মন্দির এবং মাজারগুলির মধ্যে রয়েছে বালি রাউতপাড়া দুর্গা মন্দির, বদনগঞ্জ-ফলুইয়ের শৈলেশ্বর শিব মন্দির, কৃষ্ণগঞ্জে পরমেশ্বর শিব মন্দির, হরিসভায় মানিক রাজার শিব মন্দির, শ্রীপুর হাটতলায় বিষ্ণুমন্দির, পাইনদের বিষ্ণু মন্দির, কামারপুকুর শান্তিনাথ শিব মন্দির, ছোট ডোঙ্গল কালী মন্দির, লক্ষ্মীপুর কালী মন্দির, রায়বাঘিনী ধর্ম মন্দির, গোঘাট স্বরূপনারায়ণ মন্দির, বালি হালদারপাড়া শিব মন্দির, শুনিয়া বারোয়ারি শিব মন্দির, সৈয়দ শাহ ইসমায়িল গাজি বড় আস্তানা, ইসমায়িল গাজি গঞ্জ লস্কর ছোট আস্তানা, সকুন জলা মাজার এনায়েত আলি শাহ, ভাদুরে মকদম পীরবাবার মাজার এবং হাজিপুর দেবখণ্ড বড় আস্তানা।

মন্দিরগুলির সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে চাঁপাডাঙ্গা রবীন্দ্র মহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপিকা সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গোঘাট ১ ব্লকের দ্বারকেশ্বর নদ সংলগ্ন বালি দেওয়ানগঞ্জের রাউত পরিবারে প্রাচীন টেরাকোটার দুর্গা মন্দিরটির গায়ে কোনও প্রতিষ্ঠা ফলক বা শিলালিপি নেই। ফলে নির্মাণকালও কারওর জানা নেই। প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতার ওই মন্দিরটির স্থাপত্যের ধরন বিরল। বিষ্ণুপুরের দুটি চালার জোড়বাংলো আদলের ওই মন্দিরের মাথায় আবার ছোট নবরত্ন মন্দির রয়েছে। মন্দিরের দেওয়ালে রামায়ণ, মহাভারত-সহ নানা পৌরাণিক, সামাজিক, ঐতিহাসিক, লৌকিক ঘটনার ফলক বসানো রয়েছে। শুধু এই মন্দিরটি নয়, গোঘাটের প্রাচীন মন্দিরগুলির প্রায় প্রতিটির নিজস্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং গঠনগত বৈশিষ্ট্য আছে। এগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব যথেষ্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে, গোঘাটের প্রাচীন মন্দিরগুলোর অধিকাংশেরই স্থাপত্যের ধরন বিরল। দুর্লভ-প্রাচীন এই স্থাপত্য কীর্তি সংরক্ষণের জন্য অবিলম্বে এর সংস্কার দরকার।

Goghat Temples
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy