Advertisement
E-Paper

হাওড়ায় হবে ত্রিমাত্রিক তারামণ্ডল

অন্ধকার হলঘরের উপরের দিকে তাকালেই মনে হবে, রাতের আকাশ যেন নেমে এসেছে সামনে। সূদূর গ্রহ-নক্ষত্র এসে গিয়েছে একদম ধরাছোঁয়ার মধ্যে।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪০
ত্রিমাত্রিক তারামণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

ত্রিমাত্রিক তারামণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

অন্ধকার হলঘরের উপরের দিকে তাকালেই মনে হবে, রাতের আকাশ যেন নেমে এসেছে সামনে। সূদূর গ্রহ-নক্ষত্র এসে গিয়েছে একদম ধরাছোঁয়ার মধ্যে। শুকতারা, সপ্তর্ষিমণ্ডলের দেখা পেলে মনে হবে, যেন আমরাও সেই অনন্ত ছায়াপথেরই অংশ।

হাওড়ার শরৎ সদন চত্বরের পশ্চিম প্রান্তে নির্মীয়মাণ তারামণ্ডলের ভিতরে ঢুকলে এমনই অনুভূতি হতে চলেছে দর্শকদের। ১০০টি আসনযুক্ত এই আধুনিক তারামণ্ডলের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে প্ল্যানেটোরিয়াম অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল রিসার্চ সেন্টার। তৈরিতে খরচ প্রায় ১৪ কোটি টাকা। সব ঠিক থাকলে হাওড়া পুরসভার উদ্যোগে তৈরি এই নতুন তারামণ্ডল আগামী অক্টোবরের শেষের দিকে অথবা শীতের শুরুতেই খুলে দেওয়া হবে দর্শকদের জন্য। বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় প্রতিদিন মোট ১০টি করে শোয়ের ব্যবস্থা থাকছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। প্রতিটি শোয়ের সময়সীমা হবে ২৫ মিনিট।

কলকাতার বুকে বিড়লা তারামণ্ডল সম্প্রতি সংস্কার করা হলেও তা এখনও থ্রিডি নয়। এছাড়া তার আসনসংখ্যাও অনেক বেশি (৫৭০টি)। আয়তনের দিক থেকে তুলনায় ছোট হাওড়ার এই নয়া তারামণ্ডলটি অবশ্য ত্রিমাত্রিক এবং এর প্রোজেক্টর আধুনিক ফোর কে প্রযুক্তিতে তৈরি। এমন উচ্চতম প্রযুক্তি ও আধুনিক যন্ত্রের মিশেলে তৈরি এই তারাণ্ডল পূর্ব ভারতে এই প্রথম বলে দাবি পুরসভার।

তবে শুধু বিনোদনই নয়। মহাকাশ, নিয়ে পড়ুয়াদের পড়াশোনা এবং জ্ঞানার্জনের ব্যবস্থাও এখানে থাকবে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। থাকছে মনীষীদের ছবি ও কাজ নিয়ে তৈরি আর্ট গ্যালারি। পুরসভার পক্ষে শরৎ সদনের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘জাপান, জার্মান ও ফ্রান্সের কারিগরী সহযোগিতায় কলকাতার একটি সংস্থা এই তারামণ্ডল তৈরি করছে। কলকাতার সংস্থাটির দেশ জুড়ে এই ধরণের তারামণ্ডল তৈরির অভিজ্ঞতা রয়েছে।’’

নয়া এই তারামণ্ডল ত্রিমাত্রিক করার জন্য প্রজেকশন পদ্ধতিতে একটু পরুবর্তন করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন এর দায়িত্বে থাকা এক পদস্থ পুর ইঞ্জিনিয়ার। তিনি জানিয়েছেন, এই তারামণ্ডলে প্রোজেক্টর মেশিন হলের মাঝখানে না থেকে রাখা হবে দশর্কাসন থেকে অন্তত আট ফুট উঁচুতে। দু’টি মেশিন বসবে ১৮০ ডিগ্রি কোণ করে। যাতে থ্রিডি এফেক্ট ভাল করে বোঝা যায়। তিনি বলেন, ‘‘তারামণ্ডল তৈরিতে কোনও আপোষ করা হচ্ছে না। তারামণ্ডলের মাথার উপরে যে গম্বুজের মতো করা হয়েছে, তা জল-নিরোধক করতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। থাকছে প্রতিবন্ধী দর্শকদের জন্য র‌্যাম্পের ব্যবস্থাও, যাতে তাঁরা সহজেই তারামণ্ডলে ঢুকতে পারেন। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগারও করে দেওয়া হচ্ছে।’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যে পুরসভার কাজ মানুষকে সঠিক ভাবে পরিষেবা দেওয়া, সেখানে কোটি টাকা খরচ করে তারামণ্ডল তৈরির প্রয়োজন হল কেন? এর উত্তরে হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনেক কিছুই হাওড়ায় নেই, যা কলকাতায় রয়েছে। তাই হাওড়ার বাসিন্দারাও যাতে এই ধরণের শিক্ষাক্ষেত্র বা বিনোদন থেকে বঞ্চিত না হন, সে কারণেই এই উদ্যোগ।’’

planetarium Howrah তারামণ্ডল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy