দগ্ধ: পুড়েছে ঘরের আসবাবও। নিজস্ব চিত্র
আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল একই পরিবারের চারজনের। বৃহস্পতিবার ভোরে ব্যান্ডেলের চন্দনপুরের এই ঘটনায় মৃতদের নাম সুরাত আলি শেখ (৪৭), রোজিনা বিবি(৩৩), আফরিন ইয়াসমিন (১২) এবং আসিয়ানা খাতুন (৫)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘুমন্ত স্ত্রী ও দুই মেয়ের গায়ে দাহ্য কোনও তরল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন সুরাত। পরে নিজেও গায়ে আগুন দেন।
এডিসিপি (ডিডি) স্বাতী ভাঙালিয়া বলেন ‘‘আগুন লাগার কারণ ও চারজনের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা চলছে। কী দাহ্য ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা ফরেন্সিক রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। সুয়োমোটো মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ অভিযোগ জানালে খতিয়ে দেখা হবে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যান্ডেলের চন্দনপুরের বাসিন্দা সুরাত আলি চাষের কাজ করতেন। বছর খানেক আগে পথ দুর্ঘটনায় দাদার মৃত্যুর পর বৌদি, বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়েই ছিল তাঁর সংসার। পড়শিরা জানান, মাস খানেক ধরে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে রোজিনার সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় সুরাতের। বুধবার রাতে স্বামী-স্ত্রী বিবাদ চরমে ওঠে। বৃহস্পতিবার ভোরে সুরাতের মা জাবেদা বিবি নমাজ পড়তে উঠে দেখেন, ছেলের ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন পড়শিরা। ঘরের দরজা ভেঙে দেখা যায়, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন সুরাত ও রোজিনা। খাটের উপর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কাতরাচ্ছে তাঁদের দুই মেয়ে। ঘরের আসবাবও সব জ্বলছে। এলাকার বাসিন্দারাই আগুন নেভান। গুরুতর জখম অবস্থায় সকলকে চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঝ রাস্তায় মৃত্যু হয় সুরাত এবং তাঁর ছোট মেয়ে আসিয়ানার। আর চিকিৎসা চলাকালীন মারা যান রোজিনা ও বড় মেয়ে আফরিন।
সুরাতের বৃদ্ধা মা জাবেদা বিবি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘ ঘরের দরজা খুলতে কেমন একটা ঝাঁঝালো গন্ধ পেলাম। দেখি, ছেলে, বৌ, নাতনিরা পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছে। বড় ছেলেকে আগেই হারিয়েছি। এ বার বাড়ির এতগুলো মানুষ চলে গেল। কেন এমন হল?’’ স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মুস্তাফার কথায়, ‘‘সকালের নমাজের আগে মসজিদের মাইকে আগুন লাগার ঘোষণা শুনেই বেরিয়ে আসি। সুরাতের বাড়িতে গিয়ে দেখলাম, সব শেষ। ওদের বাড়িতে অশান্তি হত, সেটা ঠিক। কিন্তু এমনভাবে পরিবারটা শেষ হবে, ভাবিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy