গ্রেফতার পাঁচ অভিযুক্ত। সোমবার, ঢোলাহাটে। নিজস্ব চিত্র
ফের শ্যামপুর-কাণ্ডে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাটের জগদীশপুর গ্রাম থেকে তাদের ধরা হয়। এই নিয়ে ওই ঘটনায় মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হল।
একটি ওয়াকফ সম্পত্তির দেখভাল কারা করবে, তা নিয়ে হাওড়ার শ্যামপুরের বাড়গড়চুমুকের মুন্সি পরিবারের দু’পক্ষের বিবাদের জেরে শুক্রবার মারধরের ঘটনা ঘটে। হানিফ মুন্সি নামে এক জনের বাড়ি ভাঙচুর, মারধর ও তাঁর পরিবারের মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল অন্য পক্ষের মতিয়র রহমান মুন্সির লোকজনের বিরুদ্ধে। রাতে অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হন শ্যামপুর থানার ওসি সুমন দাস এবং সাব-ইনস্পেক্টর তরুণ পুরকায়স্থ। মেরে তাঁদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়।
ওই হামলায় পরের দিনই গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত মতিয়র-সহ সাত জনকে। রবিবার রাতে ধৃতেরা হল— বাবর মুন্সি, বোরহান মুন্সি, রমজান মুন্সি, ইব্রাহিম মুন্সি এবং মুন্নাফ মুন্সি। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। পুলিশ জানায়, ধৃত মুন্নাফের আত্মীয় আনারুল লস্করের বাড়ি জগদীশপুরে। সেখানে কয়েকদিন থাকবে বলে আশ্রয় নিয়েছিল তারা। মোবাইলের সূত্রে তাদের সন্ধান মেলে। গভীর রাতে ঢোলাহাট থানার পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে হাওড়া জেলা পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ।
সুমনবাবু এখনও কলকাতায় এবং তরুণবাবু উলুবেড়িয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই হামলার পর থেকেই বাড়গড়চুমুক সুনসান। গ্রাম পুরুষশূন্য। মহিলার বাড়িতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। মূলত পুলিশি অভিযানের ভয়েই পুরুষেরা পালিয়ে গেলেও হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার গৌরব শর্মার আশ্বাস, ‘‘প্রকৃত দোষীদের সন্ধানেই তল্লাশি জারি থাকবে। নিরীহ কাউকে ধরা হবে না।’’
সোমবারেও গ্রামে পুলিশের টহলদারি চলে। প্রায় প্রতিটি পাড়ার মোড়েই পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। হামলায় মূল অভিযুক্ত মতিয়র রহমানের দোতলা বাড়ি এখন তালা মারা। তার বাড়ির সামনেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, পুরুষেরা বাড়িতে নেই। শুধু মহিলারা থাকায় দুষ্কতীরা হানা দিতে পারে। তাই পুলিশের টহলদারি রয়েছে। তা ছাড়া, হামলার তদন্ত এখনও চলছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ এবং রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসছেন।
সুমনবাবু এবং তরুণবাবুকে যেখানে মারধর করে ফেলে রাখা হয়েছিল, সেখানে ঘটনার তিন দিন পরেও রক্তের দাগ রয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনেই ঘটনাস্থলটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তদন্ত শেষ হলে এবং গ্রামে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরলে তবেই টহলদারি কমানো হবে বলে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy