সপ্তপর্ণা মান্না। —নিজস্ব চিত্র।
বাবার কথা মনে পড়লেই মন খারাপ হয়ে যায় সপ্তপর্ণার।
এক বছর হল সপ্তপর্ণার বাবা বাসুদেব মান্না ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। হাওড়া শ্যামপুরে গুজারপুর গ্রামের বাড়িতে এখনও জমাট শোকের ছায়া। তবে বাবার চলে যাওয়া অবশ্য দমাতে পারেনি মেয়েকে।
শ্যামপুর হাইস্কুলের কলা বিভাগের ছাত্রী সপ্তপর্ণা মান্না উচ্চ মাধ্যমিকে ৪২৫ নম্বর পেয়েছে। ভূগোলে পেয়েছে ৯২, সংস্কৃতিতে ৯০, দর্শনে ৯৫, বাংলায় ৭৮ এবং ইংরাজিতে পেয়েছে ৭০। তাঁর দাদা রীনাঞ্জন মান্না উলুবেড়িয়া কলেজে সংস্কৃতিতে এম এ পড়ছে। মা রুমাদেবী এলাকার অঙ্গনওয়াড়িতে অস্থায়ী কর্মী। সেই রোজগারের উপর নির্ভর করেই চলে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া। মাঝেমধ্যেই টান পড়ে সংসারে। সপ্তপর্ণার ইচ্ছা ভাল ভাবে শিক্ষিকার চাকরি করে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু সেই স্বপ্নে প্রথম বাধা অর্থাভাব। পলেস্তারাবিহীন ইটের জীর্ণ দেওয়াল দেওয়া দু’কামরার ঘরে বসে সপ্তপর্ণার মা রুমাদেবীর আক্ষেপ, ‘‘ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ ও দু’বেলা খাবারের জোগাড় করতে গিয়ে উভয় সংকটে পড়েছি।’’ সপ্তপর্ণা জানায়, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং নিজের দাদার কাছেই মূলত পড়াশোনা করেছে সে।
স্কুল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সপ্তপর্ণার বাড়ি। কখনও দাদার সাইকেলে চেপে, কখনও অটোয়, কখনও পায়ে হেঁটে যাতায়াত করত সে। স্কুলে যাতায়াত করতেই অনেক সময় লেগে যেত। শ্যামপুর হাইস্কুলের প্রবীণ শিক্ষক গৌতম কুমার দাস বলেন, ‘‘সপ্তপর্ণা স্কুলে ছাত্রী হিসেবে ভাল। পড়াশোনায় মনোযোগী।’’ সপ্তপর্ণার নিজের কথায়, ‘‘বাবা মারা যাওয়ার আগে আমাকে আশীর্বাদ করে গিয়েছেন। আমার বিশ্বাস তাঁর আশীর্বাদের সাহায্যই আমি উচ্চ শিক্ষিত হতে পারব। অভাবের সংসারে মায়ের দুঃখ কিছুটা হলেও দূর করতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy