Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ঝলসে গিয়েছে মুখ, অভিযুক্তের কড়া শাস্তি চান অ্যাসিড আক্রান্ত

অ্যাসিডে মুখের ডান দিকের একাংশ ঝলসে গিয়েছে। ঠোঁট কালো হয়ে ঝুলছে। কলকাতায় মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ওয়ার্ডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন জ্যোৎস্না মালিক। ওই বার্ন ওয়ার্ডেই অ্যাসিডে জখম হয়ে ভর্তি রয়েছেন তাঁর বড় ছেলেও।

অ্যাসিড ছোড়ায় অভিযুক্ত শেখ নুর আলি। ছবি: তাপস ঘোষ।

অ্যাসিড ছোড়ায় অভিযুক্ত শেখ নুর আলি। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

অ্যাসিডে মুখের ডান দিকের একাংশ ঝলসে গিয়েছে। ঠোঁট কালো হয়ে ঝুলছে। কলকাতায় মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ওয়ার্ডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন জ্যোৎস্না মালিক। ওই বার্ন ওয়ার্ডেই অ্যাসিডে জখম হয়ে ভর্তি রয়েছেন তাঁর বড় ছেলেও।

কেন অ্যাসিড হামলা হলো প্রশ্ন করতে যন্ত্রণার মধ্যেই জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, ‘‘মদ খাওয়ার প্রতিবাদ করেছিলাম। সে জন্য ওরা দলবল নিয়ে হুমকিও দিচ্ছিল। কিন্তু এমন ক্ষতি করে দেবে ভাবিনি।’’

গত রবিবার মাঝরাতে তারকেশ্বরের পিয়াসারা কলোনির বাসিন্দা জ্যোৎস্নাদেবীর বাড়ির দরজায় ইটপাটকেল পড়ার আওয়াজে কী হচ্ছে দেখতে বাইরে বেরোতেই তাঁর মুখে অ্যা়সিড ছোড়া হয়। মায়ের সঙ্গে বাইরে বেরিয়েছিল বড় ছেলে বছর বাইশের আনন্দ। অ্যাসিডে তারও শরীরে বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে যায়। মা-দাদার চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে পড়ে ছোট ছেলে রাকেশ। বাইরে এসে সে প্রতিবেশী শেখ নুর আলিকে ছুটে পালাতে দেখে। তার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ শেখ নুর আলিকে গ্রেফতার করে। সোমবার তাকে চন্দননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক জয়শঙ্কর রায় ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্যোৎস্নাদেবীর বাড়ির কাছেই থাকত বছর বিয়াল্লিশের নুর আলি। তার স্ত্রী ও এক সন্তানও রয়েছে। সে এক সময় মুম্বইতে কাজ করত। বছর দেড়েক আগে সে বাড়ি ফিরে আসে। তারপর থেকে টুকটাক কাজ করার পাশাপাশি নানা দুষ্কর্মে জড়িয়ে পড়ে। তবে কোথা থেকে সে অ্যাসিড পেল তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জ্যোৎস্নাদেবীর কথায়, ‘‘মাস ছয়েক আগে স্বামী মারা যান। দুই ছেলেকে নিয়ে কোনওমতে সংসার চালাই। মাস খানেক আগে দলবল নিয়ে নুর আলি প্রায়ই বাড়ির সামনে মদ খেয়ে গালিগালাজ করত। আমি প্রতিবাদ করলে হুমকি দিতে শুরু করে। ভয় পেয়ে এলাকার তৃণমূল নেতাদের সব জানিয়েছিলাম। ওঁরাই পুলিশের কাছে যেতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও রাস্তায় দেখা হলেই নুর হুমকি দিত। বলত, ‘নালিশ জানিয়েছে ভুল করেছিস। তোর বাড়ি-ঘর ভেঙে পুড়িয়ে দেব’। এখন দেখছি পুলিশকে আগেই সব জানালে ভাল হতো। তা হলে হয়তো এমনটা ঘটত না।’’

হাসপাতালে শুয়ে আনন্দ এ দিন কাঁদতে কাঁদতেই বলে, ‘‘আমার অবস্থা তবুও একটু ভাল। কিন্তু মায়ের কী হবে বুঝতে পারছি না।’’

মা ও ছেলে দু’জনেই চান নুরের কড়া শাস্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

acid miscreant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE