Advertisement
১৮ মে ২০২৪

প্রকাশ্যে চুরি, দায় এড়াচ্ছেন বিদ্যুৎকর্তারা

একাধিক সরকারি প্রকল্পে প্রায় সব এলাকাতেই পৌঁছে গিয়েছে বিদ্যুতের আলো। বিপিএল পরিবার হলে নিখরচায় বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।

বেআইনি: বিদ্যুতের খুঁটিতে কৌটো বেঁধে এভাবেই হুকিং চলে পান্ডুয়ার বিভিন্ন গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

বেআইনি: বিদ্যুতের খুঁটিতে কৌটো বেঁধে এভাবেই হুকিং চলে পান্ডুয়ার বিভিন্ন গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত সরকার
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

একাধিক সরকারি প্রকল্পে প্রায় সব এলাকাতেই পৌঁছে গিয়েছে বিদ্যুতের আলো। বিপিএল পরিবার হলে নিখরচায় বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে তার পরেও অবাধে বিদ্যুৎ চুরি চলছে হুগলির পান্ডুয়ায়। আর এর ফলে প্রতি মাসে প্রচুর বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হলেও তার দাম পাচ্ছে না বিদ্যুৎ দফতর।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা নেন না। যদিও বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের পাল্টা দাবি, হুকিংয়ের অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতাদের ইন্ধন, বিদ্যুৎ দফতরের সক্রিয়তার অভাব এবং মানুষের বদভ্যাসের কারণেই হুকিং বাড়ছে পান্ডুয়া এলাকায়। বিদ্যুৎ চুরি করেই চলছে আলো, পাখা, ফ্রিজ, টিভি। বিয়ে বাড়ি-সহ যে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানেও বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছে চুরি করে। এক-একটি বিদ্যুৎ পোস্ট থেকে ৮-৯টি করে হুকিং করা হচ্ছে। এতে যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। পান্ডুয়া ব্লকের পোঁটবা, পাটরা, কাঁটাগড়, গ্রামগোহাল, আয়মা, ভিটাসিন, রানাগড়, ভায়রা, বেলুন, দমদমা, পাচঁগড়া, তিন্না ব্রিজ পাড়, নিয়াল, নওপাড়া-সহ একাধিক এলাকায় গেলেই দেখা যাবে বিদ্যুৎ চুরির নানা ছবি। যদিও হুকিংয়ের অভিযোগ মানেননি পান্ডুয়া বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজার শুভদীপ রায়। তাঁর দাবি, ‘‘হুকিং নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। আমাদের অফিসাররা গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। হুকিং এর খবর পেলেই তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’

দফতরের কর্তারা না মানলেও হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। পাটরা গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গৃহবধূ বলেন, ‘‘আমি একা নয়, গ্রামের বহু মানুষই খুঁটি থেকে চুরি করে বিদ্যুৎ নেন। কয়েক বছর ধরে আমরা এই ভাবেই বাড়িতে আলো জ্বালাই, পাখা চালাই। বিষয়টি বেআইনি কিন্তু আমাদের বিদ্যুতের বিল দেওয়ার ক্ষমতা নেই।’’

পাঁচগড়া পূর্বপাড়ার বাসিন্দা তথা রানাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিহির বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, শুধু বাড়ির কাজ নয়, হুকিং করে ধান সেদ্ধ করার কাজও চলছে। প্রতিবাদ করলেও কেউ শোনেন না। উল্টে হুমকি দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হুগলি জেলা বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা বলেন, “বিদ্যুৎ চুরি রুখতে কড়া নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সচেতনতা তৈরি করতে না পারলে কাজের কাজ কিছুই
হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electricity Hooking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE