অভিযুক্ত: সালিশি কাণ্ডে অভিযোগের তির এই মহারাজ নাগের দিকেই। নিজস্ব চিত্র
এক সময়ের ডাক সাইটে ছাত্র নেতা। অভিযোগ, কলেজ নির্বাচনে বোমাবাজিতেও হাত পাকিয়ে ছিলেন। পরে লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের হয়ে বুথ দখলেও নাম ছিল প্রথম সারিতে। ওই উঠতি নেতার দাপটে বিরোধী তৃণমূলের মাথাদেরও তটস্থ থাকতে হত।
এখন দল পাল্টে এলাকায় তিনিই এখন ‘মহারাজ’। দল বদলালেও নাম মাহাত্ম্যে এখনও এতটুকুও টোল পড়েনি। মহিলাকে ছুরি মারার ঘটনায় তিন মাস কারাবাসের পর ফের খবরের শিরোনামে সেই মহারাজ নাগ।
কলেজে বোমাবাজি, নানা অছিলায় এলাকায় তোলাবাজি, সঙ্গীদের গুলি-এমন নানা অভিযোগ উঠেছে মহারাজের বিরুদ্ধে। এ বার এক মাঝবয়সি ব্যক্তিকে শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত করে সালিশি সভায় এক লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্যের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, অশোক ভট্টাচার্য নামে ওই ব্যক্তি টাকা জোগাড় করতে না পেরে সম্মানহানির আতঙ্কে ট্রেনের তলায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন। তাঁর স্ত্রী কুন্তলিকাদেবী পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে লিখেছেন,“পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে মারধরের পর জোর করে দোষ কবুল করিয়ে মোবাইলে রেকর্ডিং করিয়ে রাখা হয়। টাকা না পেলেই তা ফোনের মারফত ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল মহারাজ। টাকা জোগাড় করতে না পেরে আমার স্বামী আত্মঘাতী হলেন।”
মঙ্গলবার বার বার চেষ্টা করেও মহারাজবাবুর মোবাইলে পাওয়া না গেলেও সোমবারই তিনি জানিয়েছিলেন, ওই ঘটনায় তিনি কোনওভাবেই তিনি যুক্ত নন। রাজনৈতিকভাবে তাঁকে ফাঁসানোর জন্যই এ সব অভিযোগ আনা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, যে মহিলা অশোকবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন তাঁর স্বামীকে পুলিশ মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। তাঁর স্ত্রী ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। আর অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেল থেকে ফের রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকী রাস্তায় মৃতদেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভও দেখানো হয়। অবশ্য সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। দেহ সৎকারে পাঠানো হয়।
তৃণমূল অবশ্য ওই নেতার বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বিধায়ক, মন্ত্রী তথা জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন,“দলের নাম করে কোনও খারাপ কাজ করা যাবে না। আর খারাপ কাজ কেউ করলে দলীয় স্তরে তাকে প্রশয় দেওয়ারও কোনও জায়গা নেই। অভিযোগ হয়েছে বলে শুনেছি। পুলিশের কাজ পুলিশ করবে।”
দল অবস্থান স্পষ্ট করলেও তারকেশ্বরে তৃণমূলেরই একাংশ এখনও মহারাজের পাশেই। পুলিশেরই একটি সূত্রের খবর, সোমবার রাতে তারকেশ্বর পুরসভার পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত দলবল নিয়ে থানায় যান। দলীয় নেতার বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ পুলিশের খাতায় রয়েছে তা জানতে চান। দলীয় অবস্থানে মহারাজবাবু স্বপনবাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। যদিও ওই ঘটনা নিয়ে স্বপনবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,“আমি কিছুই জানি না।’’ তবে মহারাজকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, ফোনের টাওয়ার লোকেশান ধরে মহারাজের খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy