Advertisement
০৬ মে ২০২৪

ছাত্র-মৃত্যুতে স্কুলকে দায়ী করে বিক্ষোভ

ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন শেষ ক্লাসে অসুস্থ হয়ে পড়ে তৃতীয় শ্রেণির পডুয়া সোহম মাইতি।

সোহম মাইতি

সোহম মাইতি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৪
Share: Save:

এক তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রের এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যুকে ঘিরে তাণ্ডব চলল হাওড়ার আন্দুল রোডের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। মৃত ছাত্রের বাবা-মা, পরিজন ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ন’বছরের ওই বালকের মৃত্যু হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা স্কুলের ভিতরে ভাঙচুর করার পাশাপাশি দফায় দফায় আন্দুল রোড অবরোধ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। নামানো হয় র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত বিক্ষোভ চলার পরে বৃষ্টি শুরু হতেই বিক্ষোভকারীরা রণে ভঙ্গ দেন।

ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন শেষ ক্লাসে অসুস্থ হয়ে পড়ে তৃতীয় শ্রেণির পডুয়া সোহম মাইতি। ক্লাস নিচ্ছিলেন আশা কুমারী। এ দিন তিনি জানান, সকাল ১১টা ২০ মিনিটে ক্লাস শেষ হওয়ার ঠিক আগে সোহম অসুস্থ বোধ করতে থাকে। শুরু হয় খিঁচুনি। বমিও করে ফেলে সে। তখন শিক্ষিকারাই তাঁকে পাঁজাকোলা করে নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর দেওয়া হয় ছাত্রটির বাবা-মাকে। সোহমের বাবা পেশায় কারখানার কর্মী রবীন্দ্রনাথ মাইতি ও মা ইন্দ্রাণী মাইতি হাসপাতালে যান। আইসিইউ ফাঁকা না পেয়ে ছেলেকে নিয়ে তাঁরা কলকাতায় চলে আসেন।

কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি করতে না পেরে ওই দিন রাত ১১টা নাগাদ পার্ক সার্কাসের একটি শিশু হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করেন তাঁরা। পরের দিন সকাল ১০টায় সোহম মারা যায়। চিকিৎসকেরা তার ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে এনসেফ্যালাইটিস উল্লেখ করেন। ফলে ময়না-তদন্ত ছাড়াই বালকের অন্ত্যেষ্টি করা হয়। এ দিন স্কুল ছুটির সময়ে সোহমের বাবা-মা, আত্মীয় এবং এলাকার কয়েক জন যুবক স্কুলে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্কুলের নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সেই সময়ে তাঁদের হাতাহাতিও বেধে যায়। মা ইন্দ্রাণীর অভিযোগ, ‘‘ও স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে প্রথমে কেউ আমাদের খবর দেয়নি। শুধু তা-ই নয়, ওই দিন ক্লাসে ঠিক কী হয়েছিল, সিসি ক্যামেরায় তার কোনও ছবি নেই।’’ তাঁর দাবি, শিক্ষিকারা নিজেরাই সোহমকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে খোঁজ নেননি।

স্কুলের প্রশাসক আফসানা পরভিন বলেন, ‘‘শিশুটির যে এনসেফ্যালাইটিস হয়েছিল, তা ডেথ সার্টিফিকেটেই উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকেরা। এর পরেও ছাত্রটির পরিবারের তরফে যে সব মিথ্যা অপবাদ দেওয়া, হচ্ছে তা ঠিক নয়।’’ হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি আবু সেলিম বলেন, ‘‘শনিবার ঘটনাটি ঘটলেও ওই ছাত্রটির পরিবার কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলেই তদন্ত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE