Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Hindu Muslim

আজান আর স্তোত্র একাকার পোলবার জারুরায়

বৃহস্পতিবার ভোরে ছিল মোকাম পিরের বাৎসরিক অনুষ্ঠান। মাজারে মোমবাতি জ্বলছে। ফুল-আতর, ধূপকাঠির গন্ধে পুরো এলাকা ম ম করছে। সেখানেই প্রতি বছর পুজো দিতে আসেন মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের সঙ্গেই পিরের মাজারে চাদর চড়াতে আসেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাও।

মিলেমিশে,  হিন্দুদের বেদিতে চলছে প্রদীপ জ্বালানো, পাশেই মাজারে চলছে চাদর চড়ানো । নিজস্ব চিত্র

মিলেমিশে, হিন্দুদের বেদিতে চলছে প্রদীপ জ্বালানো, পাশেই মাজারে চলছে চাদর চড়ানো । নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত সরকার
পোলবা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২১
Share: Save:

মোকাম পিরের মাজারে পুজো দিতে এসেছিলেন চন্দননগরের সবিতা নিয়োগী। আবার ওই মাজারের পাশেই রয়েছে হিন্দু দেব-দেবীদের বেদি। সেখানে প্রদীপ জ্বেলে দিচ্ছেন মাজারে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা। এ ভাবেই সম্প্রীতির বাঁধনে বেঁধে থাকেন পোলবার জারুরা গ্রাম।

বৃহস্পতিবার ভোরে ছিল মোকাম পিরের বাৎসরিক অনুষ্ঠান। মাজারে মোমবাতি জ্বলছে। ফুল-আতর, ধূপকাঠির গন্ধে পুরো এলাকা ম ম করছে। সেখানেই প্রতি বছর পুজো দিতে আসেন মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের সঙ্গেই পিরের মাজারে চাদর চড়াতে আসেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাও। পুজো শেষে শুরু হয় খাওয়া-দাওয়া। সকলে মিলে রান্না করা হয়। তারপর পাত পেড়ে খাওয়া। এই অনুষ্ঠানের পরই শুরু হয় মেলা। চলে কয়েক সপ্তাহ ধরে।

চন্দননগর থেকে এসেছিলেন প্রবীণা সবিতা নিয়োগী। তিনি বলেন, ‘‘এই মাজারের নাম শুনেছি। এ বারই প্রথম এলাম। পুজো দিয়েছি। অন্নভোগ খেয়ে ফিরব।’’

শেখ আজাদ আলি, শেখ নিজাম আলি বলেন, ‘‘আড়াইশো বছরেরও বেশি পুরনো এই অনুষ্ঠান। এ দিনে হিন্দু-মুসলিম একসঙ্গে বসে খাবার খায়। এখানে কাউকে আমন্ত্রণ করা হয় না। সকলেই এই দিনের কথা জানেন। ঠিক চলে আসেন।’’

এলাকার বাসিন্দা সুকুমার নন্দী বলেন, ‘‘যত বছর এগোচ্ছে এই মাজারে ভিড় বাড়ছে। চন্দননগর, চুঁচুড়া, পোলবা এমনকি দুর্গাপুর, বর্ধমান থেকেও আসেন অনেকে।’’

এই মাজারের পাশেই রয়েছে আবার হিন্দুদের বিভিন্ন বেদি। সেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো দিয়ে যান মুসলিম মহিলারা। এক মহিলা বলেন, ‘‘মাজারে চাদর চড়িয়েছিলাম। তারপর এই বেদিতেও প্রদীপ জ্বালিয়েছি। সবই তো একই। প্রতি বছরই এটাই করি।’’

সুগন্ধা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য পানীয় জলের ট্যাঙ্কের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শেষে এলাকা সাফও করা হয়। এমন মিলনোৎসবে আমরা সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hindu Muslim Azan Religion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE