Advertisement
E-Paper

রাস্তায় ধস, নিকাশি নিয়ে ক্ষোভ বাগনানে

সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা বাগনান-১ ব্লকের। মুরালিবারে বাগনান উড়ালপুলের নীচের রাস্তায় শনিবার বিকেলে ধস নামে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৬
দুর্দশা: জল থইথই বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালের সামনের রাস্তা। ছবি: সুব্রত জানা

দুর্দশা: জল থইথই বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালের সামনের রাস্তা। ছবি: সুব্রত জানা

দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টি। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে উলুবেড়িয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। বিশেষ করে শহরাঞ্চল। শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোথাও এক হাঁটু জল দাঁড়িয়ে, কোথাও কোমর-সমান। জলে ডুবেছে হাসপাতালের পথ। ডুবেছে জলের কল। ফলে, মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। উঠছে নিকাশি নিয়ে প্রশ্নও।

এর মধ্যে সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা বাগনান-১ ব্লকের। মুরালিবারে বাগনান উড়ালপুলের নীচের রাস্তায় শনিবার বিকেলে ধস নামে। ফলে, নীচের নিকাশি নালার পাইপের কিছুটা অংশ ভেঙে যায়। বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস ঘটনাস্থলে যান। পূর্ত (সড়ক) দফতর মেরামতির কাজে নামে। বিডিও জানান, আজ রবিবার থেকে পূর্ত (সড়ক) দফতর পাকাপাকি মেরামতির কাজ করবে। পাইপটিও বদলে দেওয়া হবে। তবে, উড়ালপুলের থাম থেকে দূরে ধস নামায় উড়ালপুলের কোনও ক্ষতি হবে না বলে পূর্ত সড়ক দফতর জানিয়েছে।

এই ব্লকের বেড়াবেড়িয়ার মানুষ কার্যত ঘরবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এখানেই আছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, হাইস্কুল। একান্ত প্রয়োজনে যাঁদের এই সব জায়গায় যেতে হয়েছে, তাঁরা দুর্ভোগে পড়েছেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের স্ট্যান্ডপোস্টগুলি প্রায় ডুবে গিয়েছে। কোনও মতে পানীয় জল নিতে লাইন দিচ্ছেন বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে অশোক দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘জল ছাড়া চলবে কী করে! তাই কষ্ট করেও আসতে হয়েছে।’’ ওই এলাকারই বাসিন্দা শর্মিলা মান্নার একতলা বাড়ির মেঝেতে জল উঠে গিয়েছে। তিনি তক্তাপোষে সব জিনিসপত্র তুলে দিয়ে পাশে দাদার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কবে জল নামবে, কখন বৃষ্টি থামবে, এটাই এখন তাঁর দুশ্চিন্তা।

বাগনান উড়ালপুলের কাছে ধস। ছবি: সুব্রত জানা

এনডি ব্লকের মধ্যে পড়ে বাগনান আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, ব্লক অফিস, বাগনান গ্রামীণ হাসপাতাল। অসুস্থ মানুষ হাসপাতালের সামনে পৌঁছে দিশাহারা হয়ে পড়েন। যাবেন কী ভাবে? চত্বরে যে এক হাঁটু জল! বাগনান কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বাস ও অটোরিকশা ধরে যাতায়াত করেন। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডেও জল জমে যাওয়ায় যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। চটি-জুতো ভিজিয়েই বাস ধরতে হয়।

বাগনান শহরের জমা জল এক সময়ে বাসস্ট্যান্ডের বুক চিরে যাওয়া নিকাশি খালের মধ্যে দিয়ে দামোদর ও রূপনারায়ণে গিয়ে পড়ত। মুম্বই রোডের ধারের অন্য একটি নিকাশি খাল দিয়ে এনডি ব্লক এবং হাসপাতালের জল টেপুরের কাছে রূপনারায়ণে পড়ত। বাসিন্দাদের অনেকেই অভিযোগ, দু’টি নিকাশি খালই সংস্কার হয় না। তাই জল বেরোতে পারছে না। বাগনান থানা নাগরিক কমিটির সদস্য প্রসূন রায় বলেন, ‘‘প্রধান দু’টি নিকাশি খাল নিয়মিত পরিষ্কার থাকলে জল দ্রুত বেরিয়ে যেত।’’ বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা অভিযোগ মানেননি। তাঁদের দাবি, দু’টি খালই নিয়মিত সাফ করা হয়।

তা হলে শহরে জল জমছে কেন?

ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন দাস বলেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডের খালটি বড় ধরনের সংস্কার করতে হলে রেলের অনুমতি দরকার। কারণ, খালটির কিছুটা অংশ গিয়েছে রেলের জমির উপর দিয়ে। আমরা কাজ করার অনুমতি চেয়ে রেলকে চিঠি দিয়েছি।’’ অন্য খালটির জন্য পঞ্চাননবাবু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘‘মুম্বই রোড সংস্কারের সময়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ খালের অনেক অংশ বুজিয়ে দিয়েছে। আমরা চিঠি দিয়ে খালটি ঠিক করে দিতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, সমস্যাটি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন।

আমতা, আন্দুল, সাঁকরাইল, ডোমজুড়ের বিভিন্ন এলাকাও জলমগ্ন হয়েছে। উলুবেড়িয়া পুরসভার বাউরিয়া, ফতেপুর, পারিজাত প্রভৃতি এলাকায় রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় মানুষ ভোগান্তির শিকার হন। অঙ্কুরহাটিতে শুক্রবারই ‘জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক’-এর উদ্বোধন হয়েছে। সেখানেও প্রায় এক হাঁটু জল।

Bagnan Drainage System
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy