Advertisement
E-Paper

ল্যাপটপের জন্য মুম্বইয়ে বাঙালি শিল্প-নির্দেশক খুন!

গত শনিবার মুম্বইয়ের মালবনি থানা এলাকার বিরার অঞ্চলের একটি নালা থেকে উদ্ধার হয়েছিল কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী (৩৭) নামে ওই শিল্প-নির্দেশকের দেহ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৮
কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী।

কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী।

ল্যাপটপে থাকা নকশা হাতাতে মুম্বইয়ের বাঙালি শিল্প-নির্দেশককে খুন!

গত শনিবার মুম্বইয়ের মালবনি থানা এলাকার বিরার অঞ্চলের একটি নালা থেকে উদ্ধার হয়েছিল কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী (৩৭) নামে ওই শিল্প-নির্দেশকের দেহ। আদতে হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দা ওই যুবককে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছিল। ঘটনার জড়িত অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ ফুরকান অপরাধের কথা কবুল করে জানিয়েছে, মালবনির একটি গুদামে তারা কৃষ্ণেন্দুকে খুন করে দেহটি গাড়িতে চাপিয়ে কিছুটা দূরের ওই নালায় ফেলে দেয়।

তবে, খুনের কারণ নিয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। তদন্তকারীদের অনুমান, কৃষ্ণেন্দুর ল্যাপটপে থাকা শিল্পের নকশা হাতানোর জন্যই এই খুন। মালবনি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় অভিযুক্ত মোট চার জন। বাকি দু’জনের খোঁজ চলছে।

কলকাতার ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের মেধাবী ছাত্র কৃষ্ণেন্দুর বাড়ি কোন্নগরের মাস্টারপাড়ায়। ২০০৮ সালে তিনি মুম্বই চলে যান। প্রথমে একটি সংস্থায় কাজ করতেন। তারপরে নিজে সংস্থা খোলেন। বছর তিনেক ধরে তিনি গোরেগাঁওয়ে চিন্ময় মণ্ডল নামে এক শিল্পী-বন্ধুর সঙ্গে থাকছিলেন। শিল্প নির্দেশনার কাজ করছিলেন যৌথ ভাবে। ৭ অগস্ট রাত থেকে কৃষ্ণেন্দু নিখোঁজ ছিলেন।

চিন্ময় জানান, এক গুদাম-মালিকের থেকে তাঁরা কাজের জন্য ‘সেট’ ভাড়া নিতেন। ৭ অগস্ট রাতে কৃষ্ণেন্দু না-ফেরায় তিনি ওই গুদাম-মালিককে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান। তখনও জানতেন না, ওই গুদামেই কৃষ্ণেন্দুর খুন হওয়ার কথা তিনি পরে জানতে পারবেন। চিন্ময় বলেন, ‘‘৭ অগস্ট কৃষ্ণেন্দু একটি মিটিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়েছিল। ওই দিন রাত ৮টায় আমার সঙ্গে ওর শেষ কথা হয়। ও না-ফেরায় পরে গুদাম-মালিককে নিয়ে পুলিশের কাছে যাই।’’

আলোচনা: নিহতের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। নিজস্ব চিত্র

বন্ধুর যে ওই পরিণতি হবে, ভাবতে পারেননি চিন্ময়। তবে, ধৃত মহম্মদ ফুকসানকে তিনি চিনতেন। নিজেদের আড়াল করতে আরও তিন জনকে নিয়ে ফুরকানই থানায় গিয়ে কৃষ্ণেন্দুর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানায় বলে পুলিশ জানিয়েছে। মুম্বই থেকে ফোনে চিন্ময় বলেন, ‘‘আমরা ফুরকানের থেকে ৮৫ হাজার টাকা পেতাম। তবে টাকা নয়, আমাদের ল্যাপটপ হাতাতেই ও কৃষ্ণেন্দুকে খুন করে। ওর ধারণা ছিল, আমাদের ল্যাপটপ নিতে পারলেই আমাদের শিল্প নির্দেশনার সমস্ত নকশা পেয়ে যাবে।’’

শনিবারই কৃষ্ণেন্দুর মৃত্যুর খবর পৌঁছয় কোন্নগরে। বাড়িতে নিহতের বাবা চন্দনবাবু এবং মা ছায়াদেবী থাকেন। তাঁরা দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। সোমবার বিকেলে উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব ওই বাড়িতে যান। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে জানাই। তিনি মুম্বইয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন।’’ নিহতের মামাতো ভাই দিব্যেন্দু সরকার মুম্বই থেকে ফোনে বলেন, ‘‘আমিই দেহ শনাক্ত করি। পুলিশকে অনুরোধ করেছি, মৃত্যুর নেপথ্যে আরও যারা রয়েছে তাদের যেন গ্রেফতার করা হয়।’’

Crime Murder Mumbai Art Director
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy