Advertisement
E-Paper

পুকুর চুরি! বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ বিজেপি-র

অসিতবাবুর দাবি, সম্প্রতি তিনি দলীয় কার্যালয়ে যে অভিযোগ-বাক্স বসিয়েছেন, তাতেই জমা পড়া অভিযোগপত্রে বিষয়টি জানতে পেরে বিএলএলআরও-কে জানান।

প্রকাশ পাল ও তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০১:০৮
বোজানো হয়েছে এই জমিই।

বোজানো হয়েছে এই জমিই।

যুগিপাড়ার পরে এ বার তেঁতুলতলা।

ফের চুঁচুড়া শহরের ভরাট হওয়া একটি পুকুর পুনরুদ্ধারে তৎপর হলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। শনিবার ভূমি দফতরের লোকজনকে নিয়ে তিনি অভিযান চালালেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর কাপাসডাঙার তেঁতুলতলায় ওই বুজে যাওয়া জলাশয়ে। তা সত্ত্বেও সেখানে বিধায়ককে বিজেপি কর্মী-সমর্থক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল। অভিযোগ উঠল, লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রে দলের হারে হুঁশ ফিরেছে বিধায়কের।

অসিতবাবুর দাবি, সম্প্রতি তিনি দলীয় কার্যালয়ে যে অভিযোগ-বাক্স বসিয়েছেন, তাতেই জমা পড়া অভিযোগপত্রে বিষয়টি জানতে পেরে বিএলএলআরও-কে জানান। বিক্ষোভ প্রসঙ্গে অসিতবাবু বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিধায়কের কাছে সাধারণ মানুষ অথবা যে কোনও দলের লোক অভিযোগ জানাতেই পারেন। অভিযোগ যে-ই করুন, ব্যবস্থা নেব।’’

এ দিন তেঁতুলতলায় বুজে যাওয়া ওই জলাশয়ে অভিযান চলে। বিএলএলআরও (চুঁচুড়া-মগরা) দফতরের তরফে মাপজোক করা হয়। বিধায়ক ছাড়াও পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যেরা উপস্থিত ছিলেন। বিএলএলআরও দফতরের এক আধিকারিক জানান, ওখানে জলা বোজানো হয়েছে, পরিষ্কার। তবে এত দিন অভিযোগ জমা পড়েনি। বিএলএলআরও নিবেদিতা বসু বলেন, ‘‘মাপজোক হয়েছে। রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে। পুকুর-মালিককে শোকজ করা হবে। কাগজপত্র খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বিধায়ককে ঘিরে ক্ষোভ স্থানীয়দের। —নিজস্ব চিত্র।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুকুরটি কয়েক মাস আগে বোজানো হয়েছে। অনেকে জমিও কিনেছেন। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ সাহা বলেন, ‘‘১ কাঠা ৩ ছটাক জমি কিনেছি। তিন লক্ষ টাকা কাঠা দরে। রেজিস্ট্রিও হয়েছে। এখন চিন্তায় পড়ে গেলাম।’’ অনিতা মাল নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘আয়ার কাজ করি। ভাড়াবাড়িতে থাকি। ধারদেনা করে প্রায় দেড় কাঠা জমি কিনেছি। এ বার কী হবে?’’

অসিতবাবু বলেন, ‘‘পুকুর যাঁরা বুজিয়েছেন এবং কিনেছেন, সকলেই অন্যায় করেছেন। রেজিস্ট্রার কী করে রেজিস্ট্রি করলেন! এটা চরম অন্যায়। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনপ্রতিনিধি সব জেনে চুপ থাকলে, দল ব্যবস্থা নেবে। যে সব গরিব মানুষ জমি কিনেছেন, তাঁদের সুরাহার ব্যাপারে পরে আলোচনা করব।’’

এ দিন বিক্ষোভকারীরা প্রশ্ন তোলেন, কাউন্সিলর কাছেই থাকেন। অথচ, পুকুর ভরাটের খবর পেলেন না কেন? কেন পুকুর-ভরাটকারী এবং দালালরা দাপিয়ে বেড়ায়? বিধায়কের বিরুদ্ধে জমি-দালালদের প্রশ্রয় দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এক বিজেপি কর্মী অভিযোগ করেন, তিনি আগে তৃণমূলে ছিলেন। তখন একটি পুকুর ভরাট নিয়ে অভিযোগ জানালেও বিধায়ক চুপ ছিলেন। হুগলি মোড়ে ঝিল বুজিয়ে শোরুম হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। পরে অবশ্য অনেকেই মেনে নেন, পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে দেরিতে হলেও যে অভিযান হচ্ছে, এটা ভাল।

এ দিকে, বৃহস্পতিবার শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুগিপাড়ায় পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে অভিযানের পরে বিএলএলআরও পুকুর-মালিকদের নামে এফআইআর করেন। জলাশয়টিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে শরিকদের নোটিস দেওয়া হয়। এ দিন দেখা যায়, ওই জায়গায় খোঁড়াখুড়ি চলছে। বিধায়ক, পুরপ্রধান সেখানে যান। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, মালিকপক্ষের তরফে কাজ করা হচ্ছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

Chinsurah MLA চুঁচুড়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy