Advertisement
E-Paper

কর্মী-রোষে পুড়ছে বিজেপির অন্দরমহল

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং হুগলির দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নাগালের মধ্যে পেয়ে কর্মীদের একাংশ উগরে দিলেন ক্ষোভ।

দীপঙ্কর দে

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৩১
ক্ষুব্ধ কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা লকেটের। নিজস্ব চিত্র

ক্ষুব্ধ কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা লকেটের। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা নেতাকে দেওয়া হয়েছে মণ্ডল সভাপতির পদ। তার জেরে গেরুয়া শিবিরে চাপা ক্ষোভ ছিল এক বছর ধরে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং হুগলির দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নাগালের মধ্যে পেয়ে কর্মীদের একাংশ উগরে দিলেন সেই ক্ষোভ।

বুধবার ধনেখালির মদনমোহনতলায় সভা ছিল বিজেপির। সভার আকার দেখে চওড়া হেসেছিলেন মূল বক্তা দিলীপ ও লকেট। কিন্তু যেখানে সভা, সেই ধনেখালিতে দলের অন্দরমহল যে ‘কর্মী-রোষে’ পুড়ছে, তা বুঝতে বেশি সময় লাগেনি গেরুয়া শিবিরের দুই নেতা-নেত্রীর। সভা শেষে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ কলকাতা ফেরার পথে তাঁদের গাড়ি মহেশ্বরপুর ছুঁতেই দিলীপ-লকেটের গাড়ির পথ আগলে দাঁড়ান দলের কয়েকশো কর্মী। ক্ষোভ উগরে তাঁরা জানান, দল যাঁকে ধনেখালি ও সমসপুরের মণ্ডল সভাপতি করেছে, সেই অজয় কৌলে তৃণমূলে থাকতে বিজেপি কর্মীদের উপরে ‘হামলা’ চালাতেন। অজয়কে পদ থেকে সরানোর দাবিও তোলেন তাঁরা। বিক্ষোভের জেরে বিজেপি নেতৃত্বের গাড়ি আটকে ছিল প্রায় আধ ঘণ্টা। দলীয় সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য গুরুত্ব-সহকারে শোনা হবে বলে নেতৃত্ব আশ্বাস দিলে শান্ত হন তাঁরা। শুক্রবার এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিজেপির হুগলি জেলা সাংগঠনিক সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওখানে যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা বিজেপির কেউ নন। তৃণমূলের লোকজন আমাদের বদনাম করার চেষ্টা করছে।’’ ধনেখালির তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের পাল্টা, ‘‘আমাদের দু’জন কর্মীর নাম বলতে বলুন যাঁরা ওই বিক্ষোভে ছিলেন। রাজ্য জুড়ে বিজেপিতে গোষ্ঠী কোন্দল চলছে। এর আমাদের উপরে চাপাতে চাইছে ওরা।’’ গৌতমবাবুর বক্তব্যকে ‘বিড়ম্বনা’ এড়ানোর কৌশল বলেই মনে করছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি সূত্রের খবর, অজয়ের বিরুদ্ধে কর্মীদের একাংশের কেন এত ক্ষোভ, তা জানতে চান নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ নিয়ে আলোচনার জন্য দলের জেলা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল কয়েকজন মণ্ডল সভাপতিকে। কে এই অজয়?

লোকসভা ভোটের পরে ধনেখালি ১ ও ২ পঞ্চায়েত এবং সমসপুর ১ ও ২ পঞ্চায়েত নিয়ে তৈরি বিজেপির মণ্ডল সভাপতি করা হয় অজয়কে। দলের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলে থাকাকালীন অজয় বিজেপি কর্মীদের উপরে অত্যাচার করতেন। বিজেপি-তে ঢুকে দলের পুরনো কর্মীদের পদ থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে ‘হুমকি’ দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল থেকে আসা ঘনিষ্ঠদের বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব দিচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি কর্মী বলেন, ‘‘আমরা চাই অবিলম্বে মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে অজয়কে সরানো হক। তা না-হলে বিধাসভা ভোটে ফল ভোগ করতে হবে দলকে।’’ পক্ষান্তরে অজয়ের দাবি, ‘‘আমি বিজেপির বহু দিনের কর্মী। সেই ২০১৪ থেকে দল করছি। কাজেই কে কী বলছে, তাকে আমি গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘মোদিজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১৪ সালে বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণ করেছি। লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য লড়াই করেছি।’’ তাহলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে দলে এত ক্ষোভ? উত্তর এড়িয়ে অজয় বলেন, ‘‘ধনেখালির মানুষ শেষ কথা বলবেন। কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল, তা তাঁরাই ঠিক করবেন।’’

BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy