Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Howrah

নিয়মের তোয়াক্কা না করায় নৌকাডুবি, নিখোঁজ তরুণী

মাঝ নদীতে ডুবে যাওয়ার পর বাউড়িয়া থেকে কয়েকটি নৌকা গিয়ে আটজনকে উদ্ধার করে।

সন্ধান: চলছে নিখোঁজ তরুণীর খোঁজ। সোমবার উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুূব্রত জানা

সন্ধান: চলছে নিখোঁজ তরুণীর খোঁজ। সোমবার উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুূব্রত জানা

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০২:০২
Share: Save:

লাইফ জ্যাকেট না ব্যবহার করেই চলছে ফেরি সার্ভিস। নজর নেই প্রশাসনের। নৌকাডুবির ঘটনার পরেও যাত্রী সুরক্ষার ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই হাওড়া জেলা পরিষদের।

সোমবার দোল উৎসবের জন্য লঞ্চ ও নৌকা পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও অবাধে চলেছে নৌকা। সোমবার দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ কালীবাড়ি ঘাট থেকে হাওড়ার বাউড়িয়ায় দাঁড়-টানা নৌকায় পার হচ্ছিল কলকাতার একটি নাচের দল। মাঝ নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকায় ছিলেন নাচের দলের ন’জন।

মাঝ নদীতে ডুবে যাওয়ার পর বাউড়িয়া থেকে কয়েকটি নৌকা গিয়ে আটজনকে উদ্ধার করে। বছর উনিশের এক তরুণীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানায়, নিখোঁজ তরুণীর নাম প্রিয়াঙ্কা পাইক। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি। তিনি ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুরে কলকাতা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদায় নাচের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিল এই দলটি। পথে দুর্ঘটনা ঘটে।

নৌকাডুবির পরে, সোমবার বিকেলে বাউড়িয়া লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নদীতে লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ। কিন্তু তার এক কিলোমিটার দূরের বাউড়িয়া থানাঘাটে অবাধে চলছে মোটরচালিত নৌকা। দুর্ঘটনার পরেও যাত্রীদের কারও কাছেই লাইফ জ্যাকেট নেই। যদিও ঘাট-মালিকের দাবি, যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরতে বলা হলেও, তাঁরা তা পরতে চান না। হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি এক কর্তা বলেন, ‘‘দোল উৎসবের জন্য জেলার সমস্ত ঘাট বন্ধ রাখা হয়েছিল। নদীতে দাঁড়টানা নৌকায় যাত্রী পারাপার নিষিদ্ধ। তার পরেও ওই নৌকা কী করে চালানো হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। দোলের দিনে বাউড়িয়া থানাঘাটে কীভাবে ফেরি সার্ভিস চলেছে, তা-ও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাউড়িয়া থেকে এ দিন কোনও নৌকা ছাড়তে দেওয়া হয়নি। বজবজের দিক থেকে দু একটি নৌকা আসছিল। কিন্তু আমরা তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিই। যে নৌকাটি ডুবে গেছে, বাউড়িয়া থেকেই আমরা সেটিকে উদ্ধার করি। নদী ঘাটে নজরদারি ছিল বলেই তাড়াতাড়ি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। একজনের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়া জেলা পরিষদের অধীনে চলে এই ফেরি সার্ভিস। মোটরচালিত নৌকায় পঁচিশ থেকে ত্রিশ জন যাত্রী উঠতে পারেন। প্রত্যেক যাত্রীকে লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে নদী পারাপার করতে হবে। কিন্তু কেন লাইফ জ্যাকেট না পরেই যাত্রীরা যাতায়াত করছেন, তার তদন্ত করা হবে।

নৌকাডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়ার পর মেঘা দাস ও অরূপ দাস বলেন, ‘‘নদীঘাটে এসে দেখি, দোল উৎসবের জন্য নৌকা পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু বজবজ ঘাটে বেশ কয়েকটি দাঁড়-টানা নৌকা চলাচল করছিল। তাতেই আমরা চড়ি। মাথাপিছু ত্রিশ টাকা করে চেয়েছিলেন মাঝি। নদী পার হব বলে বাধ্য হয়েই রাজি হই। মাঝ নদীতে এসে দেখি নৌকার তলা থেকে হু হু করে জল ঢুকছে। নৌকা যখন ডুবে যাচ্ছে, মাঝিরা তখন সাঁতার কেটে চলে যায়। বাউড়িয়া থেকে বেশ কয়েকটি মোটরচালিত নৌকা গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Boat Capsize Missing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE