Advertisement
E-Paper

টোটো-ট্রেকারের দাপটে টানা বাস বন্ধের ডাক

টোটো-সহ রুট ভেঙে চলা বিভিন্ন গাড়ির দৌরাত্ম বন্ধের দাবিতে শেষ পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল বাস ধর্মঘটের পথ বেছে নিলেন হুগলি জেলার বাস এবং মিনিবাস মালিকরা। সোমবার জেলা সদর চুঁচুড়ায় বৈঠক করে তাঁরা ওই সিদ্ধান্ত নেন। বাস মালিকদের সাফ কথা, জেলার সর্বত্রই বাস রুট জুড়ে বেআইনি বিভিন্ন গাড়ি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাতে তাঁদের রুজিরুটি সংশয়ের মুখে পড়েছে। বার বার বলা সত্ত্বেও প্রশাসন রয়েছে চোখ বুজে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০১:১৯

টোটো-সহ রুট ভেঙে চলা বিভিন্ন গাড়ির দৌরাত্ম বন্ধের দাবিতে শেষ পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল বাস ধর্মঘটের পথ বেছে নিলেন হুগলি জেলার বাস এবং মিনিবাস মালিকরা।

সোমবার জেলা সদর চুঁচুড়ায় বৈঠক করে তাঁরা ওই সিদ্ধান্ত নেন। বাস মালিকদের সাফ কথা, জেলার সর্বত্রই বাস রুট জুড়ে বেআইনি বিভিন্ন গাড়ি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাতে তাঁদের রুজিরুটি সংশয়ের মুখে পড়েছে। বার বার বলা সত্ত্বেও প্রশাসন রয়েছে চোখ বুজে। এতে বাস শিল্পও চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই অবস্থায় লাগাতার বাস বন্ধ করা ছাড়া প্রতিবাদের আর কোনও উপায় তাঁদের সামনে খোলা নেই। আগামী ২৬ তারিখ থেকে বাস বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, আজ মঙ্গলবার এই জেলায় বৈঠক করতে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগের দিনই এমন সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করলেন বাসমালিকরা।

হুগলির আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা সৈকত দাস বলেন, ‘‘টোটো গাড়িকে আইনসিদ্ধ করার বিজ্ঞপ্তি সবে হয়েছে। ওই গাড়ি চলাচল নিয়ে আগামী ২৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তাতে বাস মালিকরাও থাকবেন। গুরুত্ব দিয়ে ওঁদের বক্তব্য শোনা হবে।’’ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। বেআইনি গাড়ির মধ্যে কিন্তু বাসও পড়ে!’’

হুগলি জেলা বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রের দাবি, জেলায় মোট ৪৬টি বাসরুট রয়েছে। ওই সমস্ত রুটে হাজার খানেক বাস চলে। দিনের পর দিন বিভিন্ন জায়গায় শাসক দলের নেতাদের বদান্যতায় পারমিটহীন গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। কোথাও ইঞ্জিন ভ্যান, কোথাও অটো, কোথাও বা একই ধরণের কিছু গাড়ি বাস রুটের উপর দিয়ে যাত্রী পরিবহণ করছে নিয়মের কোনও তোয়াক্কা না করে। কয়েক মাস ধরে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্যাটারিচালিত টোটো গাড়ি। এই গাড়ির রুট পারমিট নেই। নির্দিষ্ট রুট নেই। সরকারকে কর দেওয়ার বালাই নেই। অথচ যত্রতত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। বাস মালিকদের দাবি, জিটি রোডে টোটো চলাচল বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি পুরসভাকে টোটোর সংখ্যা বেধে দিতে হবে। বেআইনি ভাবে চলা অন্যান্য গাড়িও বন্ধ করতে হবে। জেলার পুলিশ-প্রশাসন এবং পরিবহণ দফতরে এ দিন লিখিত ভাবে ওই সমস্ত দাবি জানিয়ে দেওয়া হয়।

সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত ভৌমিক বলেন, “জেলায় কোথাও বেআইনি ইঞ্জিন ভ্যান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কোথাও ট্রেকারের মাথায় রেলিং দিয়ে এবং পাদানিতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে। আর এখন সর্বত্রই বাস রুটগুলি টোটোতে ছেয়ে গিয়েছে। আর সরকারকে কর দিয়ে আমরা মার খাচ্ছি। লোকসানের জন্য প্রচুর বাস বসে গিয়েছে।’’ সাধারণ সম্পাদক অজিত খাঁয়ের অভিযোগ, ‘‘জেলায় প্রায় দেড়-দু’হাজার টোটো চলছে। বাস রাস্তার পরিসর বাড়েনি। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। অথচ রাজ্যের বক্তব্য জাতীয় বা রাজ্য সড়কে টোটো চালানো যাবে না। এ ভাবে চলতে পারে না।’’ সংগঠনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার হুগলিতে মুখ্যমন্ত্রী আসছেন জেনে আমরা দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানাতে চাই আমরা।’’

জাঙ্গিপাড়া থেকে চণ্ডীতলা, শ্রীরামপুর থেকে বৈদ্যবাটি, উত্তরপাড়া থেকে কোন্নগর, চন্দননগর থেকে চুঁচুড়া, ত্রিবেণি থেকে পাণ্ডুয়া— সর্বত্রই কমবেশি একই সমস্যা রয়েছে বলে বাস মালিকদের অভিযোগ। জাঙ্গিপাড়া-শ্রীরামপুর ৩১ নম্বর রুটের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেকার, টোটো, অটো, প্রায় একই চেহারার প্রচুর গাড়ি চলে। নিয়ম ভেঙে ট্রেকারের ছাদে এবং পাদানিতে অতিরিক্ত প্রচুর যাত্রী তোলা হয়। বাস মালিকদের অভিযোগ, কয়েক মাস আগে ভাড়া বাড়লেও আখেরে তাঁরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। ঘটনা হচ্ছে, ওই রুটের বাস মালিকদের আন্দোলনের চাপে ট্রেকারে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া ঠেকাতে অভিযান চালিয়েছে জেলার মোটরযান বিভাগ। কিন্তু অভিযান নিয়মিত না হওয়ায় পরিস্থিতির হেরফের হয়নি।

Bus minibus hooghly shaikat das toto Transport
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy