Advertisement
০২ মে ২০২৪

গুপ্তিপাড়ায় গঙ্গায় গাড়ি, নিখোঁজ আরোহী

ভেসেল থেকে গঙ্গায় পড়ে যাওয়া গাড়ির এক আরোহীর নিখোঁজের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে হুগলির গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটে।ভেসেলের মাঝিদের দাবি, শাড়ি ব্যবসায়ী ওই যুবককে গঙ্গা থেকে উদ্ধার করে পাড়ে তুলেছিলেন তাঁরা।

গঙ্গা থেকে তোলা হচ্ছে গাড়ি। ছবি: সুশান্ত সরকার।

গঙ্গা থেকে তোলা হচ্ছে গাড়ি। ছবি: সুশান্ত সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুপ্তিপাড়া শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৬
Share: Save:

ভেসেল থেকে গঙ্গায় পড়ে যাওয়া গাড়ির এক আরোহীর নিখোঁজের ঘটনায় মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে হুগলির গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটে।

ভেসেলের মাঝিদের দাবি, শাড়ি ব্যবসায়ী ওই যুবককে গঙ্গা থেকে উদ্ধার করে পাড়ে তুলেছিলেন তাঁরা। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। শান্তিপুরের ডি এন রায় রোডের বাসিন্দা তোতন রায় নামে ওই যুবক বাড়ি না ফেরায় মাঝিদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে তাঁর পরিবার। অভিযোগ উঠেছে ঘাটে থাকা সিসি টিভির ফুটেজ নিয়েও। পুলিশ জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত হচ্ছে। ঘাটের চারজন মাঝি এবং ওই গাড়ির চালক রাজু সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থান‌ীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ এক বন্ধুর গাড়ি নিয়ে ব্যবসার কাজে বাড়ি থেকে বের হন তোতন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন শান্তিপুরেরই তেলিপাড়ার বাসিন্দা রাজু। তিনি জানান, গাড়ি নিয়ে কল্যাণী, শ্রীরামপুর, সালকিয়া এবং সল্টলেকে কাজ মিটিয়ে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের ফেরার কথা ছিল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে। কিন্তু যানজট থাকায় জাগুলি পর্যন্ত এসেও তাঁরা ঘুরপথে গুপ্তিপাড়া থেকে গঙ্গা পেরিয়ে শান্তিপুরে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।

ফেরিঘাট সূত্রে খবর, রাত সওয়া দু’টো নাগাদ গাড়িটিকে ভেসেলে তোলা হয়। কিছুটা যাওয়ার পরে ঘাটের লোকেরা দেখেন একটি আলুবোঝাই ট্রাক আসছে। ট্রাকটিকেও একই সঙ্গে পার করার জন্য গাড়ি-সহ ভেসেলটিকে ফের ঘাটে ফিরিয়ে আনা হয়। ট্রাকটিকে ভেসেলে তোলার সময়ই গাড়িটি গঙ্গায় পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়ির ভিতরেই বসেছিলেন তোতন। গাড়ির সঙ্গে তিনিও গঙ্গায় পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে মাঝিরা গঙ্গায় নেমে তাঁকে উদ্ধার করেন। মাঝিদের দাবি, জল থেকে তুলে ওই যুবককে পাড়ে বসানো হয়। তিনি বমি করছিলেন। এর মধ্যেই মাঝিদের সঙ্গে গাড়িচালক রাজুর হাতাহাতি বেধে যায়। হাতাহাতি থামলে দেখা যায় তোতনবাবু সেখানে নেই। আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ঘাটে সিসি টিভি থাকলেও সেখানে ঘটনার অনেকটাই পাওয়া যায়নি। আর সেখানেই প্রশ্ন তুলেছেন তোতনের পরিবার।

বুধবার সিসি টিভির ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ। দেখা যায়, মঙ্গলবার ২টো ২০মিনিট নাগাদ গাড়িটি ভেসেলে তোলা হচ্ছিল। ২ টো ৩৫ মিনিটে আলুর ট্রাক তোলার জন্য ফের ঘাটে ফিরে আসে ভেসেল। তার পরের অংশ আর পাওয়া যায়নি। বুধবার সকাল সওয়া ৬টা থেকে ফের সিসি টিভি চালু হয়েছে। মাঝের সময়ের ফুটেজ না থাকা নিয়ে ফেরিঘাটের এক ম্যানেজার কানাই চৌধুরীর দাবি, ‘‘আমাদের এক কর্মী ভুল করে সুইচ বন্ধ করে দেওয়ায় সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া যায়নি।’’

বুধবার শান্তিপুর থেকে তোতনের প্রতিবেশীরা এসে ফেরিঘাটে বিক্ষোভ দেখান। এ দিনই তোতনের বাবা ফণিভূষণ রায় বলাগড় থানায় ছেলের নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ছেলেকে যদি খুঁজে না-ই পাওয়া যায়, রাজু আমাদের জানাল না কেন? ওর বাড়ির লোকেরাই বা খবর দিলেন না কেন? ঠিক কী ঘটেছিল, পুলিশ তা খুঁজে বের করুক।’’ তিনি বলেন, ‘‘ক‌ল্যাণীতে এক ব্যবসায়ীর থেকে ছেলে ২০ হাজার টাকা পেমেন্ট নিয়েছিল। আর কোথা থেকে কত টাকা নিয়েছিল জানি না। টাকার জন্য ছেলেকে কিছু করা হল কি না, বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ganga Car Driver
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE