কৃষির উন্নয়নে কেন্দ্র টাকা দিলেও সরকার খরচ করতে পারছে না এবং তার জেরেই পশ্চিমবঙ্গের চাষিরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে রবিবার উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্র সফরে আসেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। সেখানেই সাংবাদিকদের কাছে কৃষি নিয়ে রাজ্য সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপান। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী জানান, কোন মাটিতে কী ফসল হবে তা জানতেই মাটি পরীক্ষা করে ‘সয়েল হেল্থ কার্ড’ দেওয়া হয় চাষিদের। মাটি পরীক্ষা কেন্দ্র গড়ার জন্য কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে টাকা দেয়। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই টাকা পুরোপুরি খরচ করতে পারেনি। পরিসংখ্যান তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে রাজ্যকে গবেষণাগার করার জন্য ৪ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য খরচ করেছে মাত্র ২ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। আবার ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে কেন্দ্র রাজ্যকে এই খাতে ৯ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। রাজ্য খরচ করে মাত্র ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা।’’
প্রয়োজনীয় সংখ্যক গবেষণাগার না-থাকার জন্য ‘সয়েল হেলথ কার্ড’ দেওয়ার কাজ ব্যহত হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান। জৈব চাষের ক্ষেত্রেও পরিকাঠামো গড়ার জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের বেশির ভাগটাই রাজ্য খরচ করতে পারেনি বলে অভিযোগ তোলেন রাধামোহন। তিনি বলেন, ‘‘কেন এই টাকা খরচ হয়নি, তা জানতে চেয়ে চিঠি দিলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোনও উত্তরও দেওয়া হয় না।’’
এ দিন বাগনানে দলের হাওড়া (গ্রামীণ) জেলার ২৮টি মণ্ডলের সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠক শেষেই সাংবাদিকদের কাছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। বাগনান থেকে তিনি বাঁকুড়দহ গ্রামে গিয়ে ফুলচাষিদের সঙ্গে কথা বলেন। চাষিরা তাঁকে জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফুলচাষ নষ্ট হয়ে গেলে তাঁরা বিমার সুবিধা পান না। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েও মন্ত্রী রাজ্য সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপান। তিনি বলেন, ‘‘চাষিদের জন্য বিমার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কোন ফসলের জন্য বিমা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই সব অভিযোগের উত্তর দিতে চাননি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের কথার জবাব দেব না। শুধু বলতে পারি, যদি কোনও কাজ না করি, কোনও টাকা খরচ করতে না-পারি, তা হলে পরপর চার বছর কেন্দ্র সরকারের ‘কৃষি কর্মণ’ পুরস্কার রাজ্য পায় কী ভাবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy