Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Chandannagar

পুলিশের ভেক ধরে কেপমারি

সম্প্রতি কলকাতা-সহ রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় একই কায়দায় অপরাধ-চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাঁদের প্রধান ‘টার্গেট’ একাকী মহিলা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

প্রকাশ পাল
চন্দননগর শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০৪:১১
Share: Save:

আপনমনে হাঁটছিলেন বৃদ্ধা। মাঝ পথে তাঁকে আটকায় ‘পুলিশ’। তাদের ‘পরামর্শ’ মেনে বৃদ্ধা গায়ের গয়না খুলে ফেলেন। তার পরেই হাতসাফাই। সাতসকালে চন্দননগর শহরে জিটি রোডের ধারে এ ভাবেই কেপমারির শিকার হলেন ওই মহিলা। ডিসি (চন্দননগর) বিশপ সরকার জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃ তীদের খোঁজ চলছে।

সম্প্রতি কলকাতা-সহ রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় একই কায়দায় অপরাধ-চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাঁদের প্রধান ‘টার্গেট’ একাকী মহিলা। সেই দলের সঙ্গে এই দুষ্কৃতীদের যোগ রয়েছে কি না, পুলিশ দেখছে। সন্ধ্যা দে নামে ওই মহিলা চন্দননগরের রথতলায় থাকেন।

প্রতিদিনের মতোই শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ তিনি কাছেই আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে যাচ্ছিলেন। মিনিট পাঁচেকের রাস্তার অর্ধেক পথ যেতে দুই যুবক তাঁকে থামায়। কালো রঙের একটি মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওই যুবকেরা জানায়, তারা পুলিশ। ‘আইডেন্টিটি কার্ড’ দেখায়। বলে, এক মহিলা মার্ডার হয়ে গিয়েছেন, সন্ধ্যাদেবী কেন গয়না পরে আছেন। গয়না খুলে যেন ব্যাগে রেখে দেন।

সন্ধ্যাদেবীর কথায়, ‘‘ঘাবড়ে গেলেও ওদের পুলিশ পরিচয়ে বিশ্বাস করে সোনার হার, বালা খুলে ব্যাগে রাখি। ছেলেদু’টো একটা কাগজ দিয়ে গয়না মুড়ে রাখতে বলে। তাই করি। এ সবের মধ্যেই কখন যে গয়না হাতিয়ে নেয়, ঘুণাক্ষরেও বুঝিনি। কাগজে মোড়া চারটি সাধারণ চুরি ব্যাগে ঢুকিয়ে দেয়।’’ ফ্ল্যাটের সামনে এসে গয়না বের করতে গিয়ে মহিলা দেখেন, সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সন্ধ্যাদেবী ঘটনাস্থলে যান। সেখানে ওই ‘পুলিশের’ দেখা মেলেনি। পরে তিনি চন্দননগর থানায় অভিযোগ জানান। তিনি জানান, দুই যুবক সেজেগুজে ছিল। মুখে মাস্ক ছিল। এক জন বাংলায় কথা বলছিল। অপর জন হিন্দিতে। তাঁর আত্মীয় সুব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘আশপাশের দোকানদার জানিয়েছেন, যে ভাবে লোকদু’টো মাসিমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁদের সন্দেহ হয়নি।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, করোনার সময় চিকিৎসক গয়না পরতে বারণ করেছেন, এই কথা বলে সম্প্রতি কলকাতার বিমানবন্দর এলাকায় যশোর রোডে এক মহিলাকে গলার হার খুলতে বলে দুই দুষ্কৃতী। মহিলা হার খুলে ব্যাগে রাখেন। তার পরে খাতায় লিপিবদ্ধ করার নামে ব্যাগ থেকে সেটি বের করে দুষ্কৃতীরা হাতসাফাই করে নেয়। কখনও ছিনতাই-কেপমারির জন্য পুলিশি নিষেধাজ্ঞার কথা বলে মহিলাদের গয়না খুলে ফেলতে বলা হচ্ছে। তার পরেই কায়দা করে তা হাতিয়ে নিচ্ছে ভেকধারীরা। এই বিষয়ে প্রবীণ নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandannagar Crime Cases
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE