Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নিখোঁজ চুঁচুড়ার সেই টোটো-চালক, অবরোধ

টোটোটির মালিক মানসপুরেরই বাসিন্দা অমরজিৎ সিংহ। রাজেশ তাঁকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা দিতেন। সারাদিন চালানোর পরে রাত ৯টা নাগাদ তিনি মালিককে টোটো ফেরত দিতেন।

প্রতিবাদ: টোটো চালককে খুঁজে বের করার দাবিতে অবরোধ।

প্রতিবাদ: টোটো চালককে খুঁজে বের করার দাবিতে অবরোধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

রক্তের দাগ লাগা একটি টোটো উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার জল্পনা শুরু হয়েছিল চুঁচুড়ার পাঙ্খাটুলি এলাকায়। তার মালিকের খোঁজ মিললেও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত চালকের খোঁজ না-মেলায় রহস্য আরও বাড়ল।

রাজেশ মোহালি নামে ওই টোটো-চালক ব্যান্ডেলের মানসপুর বস্তি এলাকার বাসিন্দা। তাঁকে খুঁজে বের করার দাবিতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ব্যান্ডেল মোড়ে জি টি রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজেশের পরিবারের তরফে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে ১১টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডে জানান, নিখোঁজ যুবকের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টোটোটির মালিক মানসপুরেরই বাসিন্দা অমরজিৎ সিংহ। রাজেশ তাঁকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা দিতেন। সারাদিন চালানোর পরে রাত ৯টা নাগাদ তিনি মালিককে টোটো ফেরত দিতেন। মূলত ব্যান্ডেল-চুঁচুড়ার মধ্যেই তিনি টোটো চালাতেন। বুধবার সন্ধে সাতটা নাগাদ টোটো নিয়ে বেরোন রাজেশ। রাত ৯টার পরেও না ফেরায় অমরজিৎ খোঁজ করতে রাজেশের বাড়ি যান। কিন্তু রাজেশ ফেরেননি। তাঁর পরিবারের লোকজন এবং পড়শিরা খোঁজাখুঁজি করেও রাজেশের সন্ধান পাননি।

রাজেশ মোহালি। ছবি: তাপস ঘোষ

বৃহস্পতিবার সকালে চুঁচুড়ার পাঙ্খাটুলি এলাকার কালীতলার কাছে থেকে পুলিশ টোটোটি উদ্ধার করে। টোটোর চালকের আসনে রক্তের দাগ লেগেছিল। তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। সেই খবর জানতে পেরে রাজেশের পরিবারের লোকজন এবং অমরজিৎ থানায় এসে টোটোটি শনাক্ত করেন। কিন্তু কোথায় রাজেশ? শুরু হয় খোঁজ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার সন্ধ্যায় ব্যান্ডেলের লিচুবাগান এলাকার একটি বস্ত্রদান শিবিরের অনুষ্ঠানে রাজেশকে দেখা গিয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে তিনি টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তা হলে কোথায় গেলেন রাজেশ? টোটোতে রক্তের দাগই বা এল কী ভাবে? ধন্দে পড়েছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশকে পাঙ্খাটুলি এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে চার যুবক টোটোটি সেখানে রেখে যায়। তিন জন দু’টি মোটরবাইকে এসেছিল। এক জন টোটোটি চালাচ্ছিল। ফেরার সময়ে সে একটি বাইকে উঠে পড়ে। চার জনের মাথাই হেলমেটে ঢাকা ছিল। কিন্তু কারা ওই চার জন? এ প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।

নিখোঁজের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে রিকশা চালাতেন রাজেশ। মাস দুয়েক টোটো চালাচ্ছেন। দূরে কোথাও ভাড়া পেলে সাধারণত তিনি টোটোর মালিক এবং স্ত্রীকে জানিয়ে যেতেন। কিন্তু বুধবার তিনি কাউকেই কিছু বলেননি। রাজেশের স্ত্রী চন্দা বলেন, ‘‘কী যে হল কিছুই তো বুঝতে পারছি না। কিছু তো বলে যায়নি। ও মোবাইলও ব্যবহার করে না। ফলে, আমরা পুরোপুরি অন্ধকারে।’’ অমরজিৎ বলেন, ‘‘রাজেশকে অনেক দিন চিনি। শান্ত স্বভাবের ছেলে। নিশ্চিন্তে ওঁকে টোটো চালাতে দিয়েছিলাম। পুলিশ দ্রুত ওঁকে খুঁজে বের করুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE