দু’মাস বেতন মেলেনি। ফলে, নতুন বছরের শুরুতে রীতিমতো সমস্যায় শ্রীরামপুর পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা। পুর-কর্তৃপক্ষের সাফাই, তহবিলে টাকার ঘাটতি। তাই এই পরিস্থিতি। তবে, দ্রুত ওই কর্মীদের পাওনা দিয়ে দেওয়া হবে। ২৯ ওয়ার্ডের এই পুরসভার প্রায় ছ’শো অস্থায়ী সাফাইকর্মী আছেন। তাঁদের অভিযোগ, নভেম্বর-ডিসেম্বরের বেতন মেলেনি। ফলে, দুর্মূল্যের বাজারে সংসার চালাতে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। বেশ কয়েক জন কাজ পাচ্ছেন না বলেও শোনা যাচ্ছে।
এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে সাফাইকর্মীদের মধ্যে। মাহেশ এলাকার এক সাফাইকর্মীর আক্ষেপ, ‘‘লকডাউনে যখন ভাইরাসের ভয়ে গোটা এলাকা ঘরবন্দি, তখনও আমরা ঠেলাগাড়ি নিয়ে বেরিয়েছি। আমরা নাকি করোনা-যোদ্ধা! অথচ দু’মাস বেতন নেই। খারাপ লাগছে।’’ অনেকেরই প্রশ্ন, তাঁদের বেতন খুব বেশি নয়। শহর সাফসুতরো রেখে সে টুকুও কেন সময়ে তাঁরা পাবেন না?
ক্ষোভ থাকলেও সাফাইকর্মীরা অবশ্য কাজ বন্ধের রাস্তায় হাঁটেননি। তাঁদের বক্তব্য, নিজেদের কষ্ট হলেও জরুরি পরিষেবা বলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসুর অভিযোগ, এর আগেও অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের টাকা বকেয়া রাখার নজির রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবাদ করলে পাছে বসিয়ে দেওয়া হয়, সেই ভয়ে অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা কিছু বলতে পারেন না। সেই সুযোগটাই
নেওয়া হয়।’’
পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য সন্তোষ সিংহের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে গত ন’মাস ধরে পুরসভার কর আদায় কমেছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও পুরবাসীর থেকে যে টাকা তহবিলে আসে, তাও তলানিতে ঠেকেছে। তা ছাড়া করোনা, ডেঙ্গি মোকাবিলায় সাফাই-অভিযান অনেক বেশি হয়েছে। তাই খরচও হয়েছে বেশি। সব মিলিয়েই এই সমস্যা। তবে শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে বলে তাঁর আশ্বাস।
সন্তোষের দাবি, কাউকে বসানো হয়নি। উৎসব, ডেঙ্গি মোকাবিলা প্রভৃতি বিশেষ সময়ে কাজের জন্য চুক্তিভিত্তিক কিছু কর্মী নিয়োগ করা হয়। এই মূহূর্তে বিশেষ পরিস্থিতি না-থাকায় এবং তহবিলে সঙ্কটের কারণে তাঁদের আপাতত কাজ দেওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার আয় অনেক কমেছে। সেই কারণেই কিছুটা সমস্যা হয়েছে। শনিবার প্রশাসকমণ্ডলীতে আলোচনা হয়েছে। সমস্যা মিটে যাবে। আশা করছি, আগামী ৮ তারিখে নভেম্বরের বেতন দিয়ে দেওয়া হবে। চলতি মাসের শেষেই ডিসেম্বরের বেতনও দেওয়া হবে।’’
১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর তথা ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর অসীম পণ্ডিতেরও দাবি, ‘‘ওই কর্মীদের বেতন দ্রুত মিটিয়ে দিতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’’