চালু করা হচ্ছে ক্লক টাওয়ারের ঘড়ি। ছবি: তাপস ঘোষ
তিন দিন ধরে থমকে ছিল চন্দননগর স্ট্র্যান্ডের ক্লক টাওয়ারের ঘড়ির কাঁটা। শুক্রবার আনন্দবাজারে সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই ঘড়ি সচল করতে উদ্যোগী হল ‘চন্দননগর হেরিটেজ’।
ঘড়িতে দম দেওয়ার জন্য ৫০০ টাকা মাসোহারায় শহরের হাটখোলার বাসিন্দা সুশান্ত দত্তকে নিয়োগ করাছিল ওই সংস্থা। করোনা-পরিস্থিতিতে চলতি মাসেই তাঁর মাসোহারা বন্ধ হয়। এরপর মঙ্গলবার ঘড়িতে দম দেওয়া বন্ধ করেন। সে দিন বেলা ২টোর সময় দাঁড়িয়ে যায় ঘড়ির কাঁটা দু’টি। ১৮৪৫ সালে ফ্রান্সের বাসিন্দা জোসেফ ড্যুমেন ঘড়িটি দান করেছিলেন। সিঁড়ি বেয়ে ২০ ফুট উঠে প্রতিদিন ঘড়িতে দম দিতেন স্বপন। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ক্লক টাওয়ারের ঘড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
শুক্রবার সকালে দেখা যায়, ক্লক টাওয়ারে উঠে ঘড়ি সারাচ্ছেন সুশান্ত। চার দিন পরে ঠিক দুপুর ২ টোর সময় ফের ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে শুরু করে। আনন্দবাজারে ঘড়ি বন্ধ থাকার সংবাদ পড়ে এ দিন সকালেই সুশান্তর কাছে যান চন্দননগর হেরিটেজের কর্তারা। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘মাসোহারা বন্ধ হওয়াতে যত না কষ্ট পেয়েছি, তার থেকে অনেক বেশি দুঃখ পেয়েছি ঘড়ির কাঁটা না-চলায়। ৩০ বছর ধরে ঝড়-জল উপেক্ষা করে ক্লক টাওয়ারের উপরে উঠে দম দিয়েছি ঘড়িতে। রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেছি।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘ঘড়িটির প্রতি ভালবাসা জন্মে গিয়েছে। সঠিক সময় দিচ্ছে কি না, তা দেখতে রোজ আসতাম। কয়েকদিন ধরে ঘড়ির কাটা বন্ধ থাকায় মনে হচ্ছিল, আমার হৃদয়ের স্পন্দন যেন বন্ধ হয়ে রয়েছে।’’ তাঁর আর্জি: ‘‘বর্তমান সময়ের বাজারদরের নিরিখে মাসোহারা দিলে ভাল হয়।’’
চন্দননগর হেরিটেজের সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন,‘‘ শহরের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই ক্লক টাওয়ারের ঘড়ির রক্ষণাবেক্ষণে উদ্যোগী হয়েছি আমরা। তবে জেলা প্রশাসন ঘড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে কিছু অর্থ-সহায়তা করলে খুবই ভাল হয়।’’
চন্দননগর পুরসভার কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy