পঞ্চায়েত ‘দখল’ করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলির মরিয়া চেষ্টা এ রাজ্যে নতুন নয়। অথচ, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হাওড়ার বাগনান-১ ব্লকের বাইনান পঞ্চায়েতের ক্ষমতা ‘দখল’ করতে কোনও চেষ্টাই নেই তৃণমূল ও বামফ্রন্টের!
উপপ্রধানের পদ ফাঁকা। ওই পদে গত ১৩ সেপ্টেম্বর নির্বাচন থাকলেও কোনও দল ভোটাভুটিতে যায়নি। প্রধান সাহানা বানু কোন দলের তা নিয়েও বিভ্রান্তি কম নয়। এই অবস্থায় পরিষেবাও কার্যত মিলছে না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
কিন্তু পঞ্চায়েতটি নিয়ে কেন উৎসাহ নেই রাজনৈতিক দলগুলির?
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতের ২১ আসনের মধ্যে ১৩টিতে জিতে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে। ৮টিতে জেতে কংগ্রেস। তৃণমূল কোনও আসন পায়নি। বছরখানেক আগে সিপিএমের প্রধান-সহ সাত জন বাম সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যান পাঁচ জন। তবে, এই দলবদল আনুষ্ঠানিক ভাবে হয়নি। বামফ্রন্ট সংখ্যালঘু হয়ে পড়ায় সিপিআইয়ের উপপ্রধান পদত্যাগ করেন। তার পরেই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে শৌচাগার নির্মাণে লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পঞ্চায়েত সদস্যদেরই একাংশ মনে করছেন, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই পঞ্চায়েতের ধারে-কাছে ঘেঁষতে চাইছে না তৃণমূল এবং বামফ্রন্ট।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায়ের দাবি, ‘‘ওই পঞ্চায়েত বামফ্রন্টের দখলে আছে। ওখানে আমাদের কোনও সদস্যই নেই। তাই উপপ্রধান নির্বাচনে আমরা অংশ নেব কী ভাবে?’’ পক্ষান্তরে, বামফ্রন্টের পক্ষে পদত্যাগী উপপ্রধান সিপিআইয়ের প্রতীম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধান-সহ আমাদের দলের সাত জনকে ভাঙিয়ে নিল তৃণমূল। আমরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়লাম। প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে শৌচাগার তৈরিতে লুঠপাট চালিয়েছে তৃণমূল। এখন বিপাকে পড়ে সব দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে ওরা।’’ কংগ্রেস এটাকে বামফ্রন্ট ও তৃণমূলের ‘ঝগড়া’ বলে মন্তব্য করেছে।
কী বলছেন প্রধান সাহানা বানু?
বামফ্রন্ট এবং তৃণমূল দু পক্ষই যখন তাঁকে তাদের দলের কেউ নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে, তখন সাহানা কিন্তু নিজেকে তৃণমূলের প্রধান বলেই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সবাই জানেন আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। দলের হয়ে সমাবেশও করছি।’’ শৌচাগার দুর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলেও দাবি করেছেন সাহানা।
দেখেশুনে ব্লক প্রশাসনের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘বিচিত্র পরিস্থিতি। উপপ্রধান নির্বাচন করা হয়তো সম্ভব হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy