Advertisement
E-Paper

স্বাস্থ্য ভালই, দাবি শ্রীরামপুরে

এই উড়ালপুলে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলে। চলে পণ্যবাহী ভারী ট্রাক। চালকরাও সেতুর পরিস্থিতি নিয়ে সকলেই সন্দিহান। এই কাজের পর তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘শুধু রেলিং সারাল‌েই সেতু পোক্ত হবে তো?’’

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২০
শ্রীরামপুর উড়ালপুলের নীচে শিকড় বট-অশ্বত্থর। ছবি: দীপঙ্কর দে

শ্রীরামপুর উড়ালপুলের নীচে শিকড় বট-অশ্বত্থর। ছবি: দীপঙ্কর দে

দু’বছর আগে পোস্তা উড়ালপুল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার পরে আশঙ্কা বেড়েছিল। মঙ্গলবার মাঝেরহাট সেতুর পরিণতির পরে শ্রীরামপুরের উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণের প্রশ্ন আরও জোরাল হয়েছে। সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতর অবশ্য আশ্বস্ত করছে, উড়ালপুলের কাঠামো দিব্যি মজবুত রয়েছে। তবে বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা সেতুর রেলিং ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।
রেললাইনের উপরে জিটি রোডে ওই উড়ালপুলের ফলক জানান দিচ্ছে, ১৯৯১ সালের ১ এপ্রিল এটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। উড়া‌লপুলের নীচে বহু দোকানঘর রয়েছে। বসে বাজার। উড়ালপুলের গা ঘেঁষে প্রচুর বাড়ি এবং বহুতল গড়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের অনেকেরই বক্তব্য, সেতুটি ক্রমশ রুগ্ন হয়ে পড়ছে। কখনও পলেস্তারা খসে পড়ে। ভাঙা গার্ড-ওয়ালের দু’ধারের দখল নিয়েছে
বট-অশ্বত্থ।
উড়ালপুলটি ৮০০ মিটার চওড়া। ভগ্নদশা চোখেই দেখা যায়। দু’পাশে কংক্রিটের রেলিংয়ের অবস্থা ভয়াবহ। জায়গায় জায়গায় কংক্রিট খসে লোহার রড বেরিয়ে গিয়েছে। কলকাতার ঘটনা এমন আতঙ্ক তৈরি করেছে যে স্থানীয় এক যুবক বাপ্পা দত্ত বলেই ফেলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে হয়তো ক্ষতিপূরণ মিলবে। কিন্তু সেই টাকা সংস্কারের কাজে লাগানো উচিত। তা হলে দুর্ঘটনাটাই ঘটবে না।’’ মাঝেরহাট-কাণ্ডের পরে এই সেতুর হাল নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াও সরব হয়ে উঠেছে।
এ দিন অবশ্য সেতুর জীর্ণ রেলিং ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। তবে কি মাঝেরহাট দুর্ঘটনার পরে তড়িঘড়ি কাজ শুরু হ‌ল?
পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা তা মানেননি। তাঁদের দাবি, সাত দিন আগেই কাজ হাত দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির জন্য থমকে ছিল। পূর্ত দফতরের শ্রীরামপুরের সহকারি নির্বাহী বাস্তুকার সুমিতকুমার দাস জান‌ান, প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ করে ওই কাজ করা হবে। পুরনো রেলিং ভেঙে ফেলে সেই জায়গায় নতুন করে রেলিং (ক্র্যাশ ব্যারিয়ার) তৈরি করা হবে।
এই উড়ালপুলে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলে। চলে পণ্যবাহী ভারী ট্রাক। চালকরাও সেতুর পরিস্থিতি নিয়ে সকলেই সন্দিহান। এই কাজের পর তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘শুধু রেলিং সারাল‌েই সেতু পোক্ত হবে তো?’’
সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন থাকলেও পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য, সিকি শতাব্দীর বেশি পুরনো সেতুটির সার্বিক স্বাস্থ্য মোটেই আতঙ্কিত হওয়ার মতো নয়। কিছু দিন আগেই রেলিংয়ের ধারের গাছ কাটা হয়েছিল। ফের গজিয়ে উঠেছে। রেলিং ভাঙলেই স্বাভাবিক ভাবে গাছগুলি উপড়ে ফেলা হবে। সেতুর নীচের যে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তা আসলে কংক্রিটের পাতলা স্তর। সামান্য মেরামতিতেই ঠিক হয়ে যাবে। অর্থাৎ এখনই সেতুর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন না ইঞ্জিনিয়াররা।
দফতর সূত্রে খবর, আজ, বৃহস্পতিবার সরেজমিনে সেতুর পরিস্থিতি দেখবেন ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁদের দাবি, প্রতি বছর ‘ভেরিফিকেশন’ করা হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞ কমিটি দ্বারা উড়ালপুলের ‘হেলথ অডিট’ কি হয়? উত্তর মেলেনি।

Uralpool Bridge Srirampore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy