Advertisement
E-Paper

বাসরুট ছাড়ছে না টোটো, গোলমাল হুগলিতে

প্রশাসনের নির্দেশে শুরু হয়েছে ধরপাকড়। কিন্তু হুগলিতে জিটি রোড-সহ বিভিন্ন বাসরুটে টোটো চলাচল এখনও বন্ধ তো হলই না, নানা দিকে এ নিয়ে শুরু হয়েছে অশান্তি।শুক্রবারই উত্তরপাড়ায় জিটি রোড অবরোধ করেছিলেন টোটো-চালকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৬ ০০:৩৩
জিটি রোড়ে দেদার চলছে টোটো। শনিবার ছবিটি তুলেছেন তাপস ঘোষ।

জিটি রোড়ে দেদার চলছে টোটো। শনিবার ছবিটি তুলেছেন তাপস ঘোষ।

প্রশাসনের নির্দেশে শুরু হয়েছে ধরপাকড়। কিন্তু হুগলিতে জিটি রোড-সহ বিভিন্ন বাসরুটে টোটো চলাচল এখনও বন্ধ তো হলই না, নানা দিকে এ নিয়ে শুরু হয়েছে অশান্তি।

শুক্রবারই উত্তরপাড়ায় জিটি রোড অবরোধ করেছিলেন টোটো-চালকেরা। শনিবার এখানে অটো চলতে তাঁরা বাধা দেন বলে অভিযোগ। সকালে আবার শ্রীরামপুরে দু’টি অটো দাঁড় করিয়ে ভাঙচুর চালানো হয় এবং চালকদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ভয়ে অটোর যাত্রীরা মাঝরাস্তায় নেমে যান। টোটো-চালকেরা বাসরুটে অটো চলতে দেওয়ার দাবিতে অনড়।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই জিটি রোড-সহ জেলার বাসরুটগুলিতে টোটো চলতে দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয়, সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক থাকবে। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিএসপি (ট্রাফিক) অরুণ মণ্ডল বলেন, ‘‘আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর এবং জেলা পুলিশের তরফে জিটি রোড-সহ জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল বন্ধ করতে অভিযান জারি রয়েছে। পথ নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সব রকম চেষ্টাই চলছে।’’

হুগলিতে টোটো চলতে শুরু করে বছর তিনেক আগে। প্রথম থেকেই অটো-চালকেরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। পুলিশ, প্রশাসন সেই সময়ে হাত গুটিয়ে ছিল বলে অভিযোগ। এই ক’বছরে জেলার প্রতিটি শহরেই হাজার হাজার টোটো রাস্তায় নেমে গিয়েছে। অভিযোগ, টোটো-চালকেরা কোনও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেন না। ফলে, পথ দুর্ঘটনা বাড়ছে এবং সর্বত্র যানজটও বেড়ে গিয়েছে। উত্তরপাড়া, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি, পান্ডুয়া, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল— সর্বত্র একই চিত্র। জিটি রোডে টোটো-স্ট্যান্ড পর্যন্ত গজিয়ে উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি জেলায় বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেন বাস-মালিকেরা। জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে‌ন। পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। জিটি রোড-সহ জেলার বাসরুটে টোটো চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টেরও নির্দেশিকা রয়েছে। পথ নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনকে।

দিন কয়েক ধরেই জিটি রোডে টোটো ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। তাতেই বেঁকে বসেছেন‌ টোটো-চালকেরা। শনিবারেও জিটি রোড, আরামবাগ লিঙ্ক রোড-সহ কয়েকটি বাসরুটে টোটো চলতে দেখা গিয়েছে। উত্তরপাড়া এবং শ্রীরামপুরে শাসক দলের নেতাদের একাংশের মদতেই টোটোর রমরমা বলে অভিযোগ অটো-চালকদের। এই অভিযোগ এড়িয়ে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তও জানিয়েছেন, টোটো চলাচল নিয়ে সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। কোনও অবস্থাতেই বাসরুটে টোটো চলবে না। নির্দেশ অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশাসন কঠোর হলেও টোটো-চালকেরা তাঁদের বাসরুটে টোটো চালানোর দাবি ছাড়তে নারাজ। এ দিন সকালে প্রায় চল্লিশ জন টোটো-চালক শ্রীরামপুরের গোয়ালাপাড়া এলাকায় জিটি রোডের সামনে জড়ো হন। অভিযোগ, রিষড়া স্টেশন-শ্রীরামপুর স্টেশন রুটের কয়েকটি অটোকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। অন্তত দু’টি অটোতে ভাঙচুর করা হয়। অটো-চালকেরা থানায় গিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। টোটো সংগঠনের কর্তাদের ডেকে সতর্ক করেন পুলিশ আধিকারিকরা। অটো-রুটে পুলিশি টহলেরও আশ্বাস দেওয়া হয়।

অজয় দাস নামে এক অটো-চালক বলেন, ‘‘যাত্রী নিয়ে রিষড়া স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎই ওরা আমাকে ঘিরে ধরে। রাস্তার উল্টোদিকে আর এক অটো-চালককে ধরে টানাহ্যাঁচড়া করছি‌ল। আমাকে মারধর করে। অটোতে ভাঙচুর করে। কোনও রকমে অটো নিয়ে পা‌লিয়ে বাঁচি। যাত্রীরা ভয়ে নেমে যান।’’

disturbance hooghly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy