বাগনানে বন্ধ পাম্পঘর। — নিজস্ব চিত্র।
গ্রামে গ্রামে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে রয়েছে বিদ্যুৎ চালিত জলের পাম্প। কিন্তু সেই পাম্পগুলি কারা দেখভাল করবে সেই নিয়ে কাজিয়া শুরু হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মধ্যে। ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। শুধু হাওড়া জেলা নয়, অন্য জেলাতেও তৈরি হয়েছে এই সমস্যা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় একাধিক জলের পাম্প রয়েছে। সেগুলির দেখভাল করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। তবে জেলা পরিষদও কয়েকটির দায়িত্বে রয়েছে। দৈনিক পাম্পগুলির দেখভাল এবং চালানোর জন্য রয়েছেন দু’জন করে অপারেটর। অপারেটরদের বেতন এবং পাম্পের বিদ্যুতের বিল দেয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। যে পাম্পগুলি জেলা পরিষদ দেখাশোনা করে সেগুলির খরচ তারা দেয়।
প্রায় এক বছর আগে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন জানায়, তারা গ্রামে নতুন পাম্প বসিয়ে পাইপ লাইন পেতে দেবে। কিন্তু পুরনো এবং নতুন দু’ধরনের পাম্প চালানো এবং দেখভালের খরচ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে। চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের বক্তব্য: তাদের থেকে পঞ্চায়েতগুলির প্রতি বছর ৭০ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা। এছাড়াও রয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকা। তাই পঞ্চায়েতগুলির জলের পাম্পের আর্থিক দায়িত্ব নিতে অসুবিধা হবে না বলেই মনে করছে তারা।
হাওড়া জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে এই বিষয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। পঞ্চায়েত স্তরে কমিটি তৈরি করে জলের পাম্পগুলি তাদের হাতে তুলে দিতে বলা হয়। এই নিয়ে হাওড়া জেলার পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে বৈঠকও করে হাওড়া জেলা পরিষদ। সেখানে কয়েকজন পঞ্চায়েত প্রধান জানান, তাঁরা পাম্প দেখভাল করলেও সেগুলির খরচ দিতে পারবেন না। কারণ টাকা নেই। তাই পাম্পগুলি হস্তান্তরের আগে সেগুলি দেখভালের খরচ কী ভাবে হবে সেটি জানাতে হবে এবং পাম্পগুলিকে সারিয়ে দিতে হবে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হাওড়়ার একটি পঞ্চায়েতের প্রধানের দাবি, ‘‘চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় আমাদের পাম্প চালাতে বলা হচ্ছে। কিন্তু সেই টাকা পুরোটাই খাতায় কলমে। বাস্তবে এখনও পঞ্চায়েতে আসেনি। রাজ্য সরকারের নির্দেশে জলকরও নেওয়া যাবে না। তাহলে দেখভালের খরচ কোথা থেকে আসবে? উপভোক্তারা তো আমাদের ধরবেন!’’
অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) শঙ্করপ্রসাদ পাল বলেন, ‘‘প্রধানদের বক্তব্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জানানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ এলে স্থির করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy