Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

কাজে পরিযায়ীরা, ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি

শ্যামপুরের অনন্তপুরে একটি সুতোকলের ৪০০ শ্রমিকের মধ্যে ৯০ জন সংক্রমিত হয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০৪
Share: Save:

আনলক-পর্বে কল-কারখানা খোলায় ভিন্‌ রাজ্য থেকে শ্রমিকেরা কাজে আসছেন। তার জেরে হাওড়ায় ফের করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। যা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসনের।

শ্যামপুরের অনন্তপুরে একটি সুতোকলের ৪০০ শ্রমিকের মধ্যে ৯০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। দিন দুয়েক আগে সংক্রমণের এই রিপোর্ট আসার পরে কারখানাটিকে ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকা’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কারখানাটি।

সংক্রমিত শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য শ্যামপুর-২ নম্বর ব্লক কিসান মান্ডির ‘সেফ হোমে’ রাখা হয়েছে। উদয়নারায়ণপুরে একটি বহুজাতিক সংস্থার কারখানার কয়েকজন শ্রমিকও সংক্রমিত হয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন কর্তারা জানিয়েছেন।

একই ঘটনা ঘটেছে সাঁকরাইলের কয়েকটি কারখানায়। সংক্রমিতদের বেশিরভাগই ভিন্‌ রাজ্যের শ্রমিক বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, একটা সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনা ব্যাপক ভাবে ছড়িয়েছিল। অনেক পরিকল্পনা করে সেই প্রবণতা আটকানো গিয়েছে। সুস্থ হয়ে বহু পরিযায়ী শ্রমিক ফের ভিন্‌ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। এখন আবার উল্টো ঘটনা।

এখানে কাজে আসা ভিন্‌ রাজ্যের শ্রমিকদের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটছে। কারখানায় প্রথমে দু’এক জন শ্রমিক সংক্রমিত হলে বাকিদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাতেই সংক্রমিতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কারখানাগুলির জন্য কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে হাওড়ায় সংক্রমণ কমতে থাকে। সপ্তাহের প্রথমে যেখানে দৈনিক প্রায় ১৫০ জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন, সপ্তাহের শেষে তা দাঁড়ায় ১০০-র আশপাশে। কিন্তু তার পর থেকে ফের বাড়তে থাকে দৈনিক সংক্রমণের হার। ১৬ সেপ্টেম্বর সেই সংখ্যা ছিল ১৯৪।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা নানা পরিকল্পনা করে যখন জেলায় দৈনিক সংক্রমণ কমিয়ে আনছিলাম, তখনই কারখানার শ্রমিকদের সংক্রমিত হওয়ার খবর আসতে শুরু করল। এটা নতুন বিপদ।’’

করোনায় মৃত্যুর হার না-কমাও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে। বর্তমানে মৃত্যুর হার ২.৯%। এটি কমিয়ে করতে হবে ১.৯%। সেটা হচ্ছে না।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘অনেক দিক থেকেই চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু মৃত্যুর হার কমছে না। গুরুতর সংক্রমিতদের একটা অংশ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাচ্ছেন। এটা বন্ধ করতে হবে।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘আরও বেশি নজরদারি চালিয়ে গুরুতর সংক্রমিতদের হাসপাতালে আনতে হবে। সেটাই মৃত্যুর হার কমানোর একমাত্র উপায়।’’

আপাতত অনন্তপুরের সুতোকলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারখানাটিকে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। সংক্রমিতদের ফের পরীক্ষা করা হবে। সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই কারখানা খোলার অনুমতি দেওয়া হবে বলে শ্যামপুর ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে। উদয়নারায়ণপুর এবং সাঁকরাইলে যে সব কারখানার শ্রমিকেরা আক্রান্ত হয়েছেন, সেগুলিও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Covid Infection Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE