করোনা সংক্রমণ রুখতে আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছে হুগলি জেলার বিভিন্ন পুরসভা। এর মধ্যে উত্তরপাড়া পুরসভা এমন কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে যা নজর কেড়েছে অন্য এলাকার বাসিন্দাদেরও।
পুর কর্তৃপক্ষ এখানে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে পুরকর্মীদের নিয়ে। যাঁরা ২৪ ঘণ্টাই এলাকার মানুষকে নানা পরিষেবা দিচ্ছেন। তার ফলে মানুষকে বাইরেও বের হতে হচ্ছে না। পুর এলাকায় বেশ কিছু বয়স্ক মানুষ থাকেন, যাঁদের ছেলেমেয়েরা কাজের তাগিদে দেশের নানা প্রান্তে আটকে রয়েছেন। পুর কর্তৃপক্ষ সেই বিষয়টি মাথায় রেখে একটি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে পুর কর্তৃপক্ষকে তাঁদের প্রয়োজনের কথা জানালে পুরকর্মীরা নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে সমস্যা মেটাচ্ছেন।
বাজার-দোকানে গিয়ে দূরত্ব –বিধি না মানার অভিযোগ বারবার উঠছিল। সেই সমস্যার সমাধানে উত্তরপাড়া, ভদ্রকালী, হিন্দমোটর এবং কোতরং এলাকার সমস্ত বাজারই বড় মাঠে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তার পাশাপাশি বাজারগুলিতে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পুরসভার পক্ষ থেকে মহামায়া হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক দীর্ঘদিন ধরেই চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচটি বেড, ভেন্টিলেশন এবং অ্যাম্বুল্যান্সের সুবিধা যুক্ত একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে সেখান থেকে রোগীদের স্থানান্তরও করা যাবে।
অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, বারবার বলা সত্ত্বেও জ্বর বা অন্য কোনও শারীরিক উপসর্গ দেখা দিলেও রোগীরা সরাসরি হাসপাতালে যাচ্ছেন না। এই সমস্যা এড়াতে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে মোট ১০টি থার্মাল গান কেনা হয়েছে। পুরসভার চিকিৎসকদের নিয়ে একাধিক দল তৈরি করা হয়েছে। তাঁরাই পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন। থার্মাল গান দিয়ে পুর নাগরিকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রয়োজন বুঝলে ওই দলে থাকা চিকিৎসকেরা হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে পাঠাচ্ছেন সাধারণ মানুষকে।
পাশাপাশি পুর এলাকার বিভিন্ন এলাকায় সংক্রমণ এড়াতে দমকল ও পুর কর্মীদের কাজে লাগিয়ে এলাকা সাফসুতরো করা চলছে। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘করোনা প্রতিরোধে আরও কী কী ব্যবস্থা
নেওয়া যায়, তার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তার সঙ্গেই মানুষকে সচেতন করার কাজও চলছে। অকারণে মানুষের বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা আটকাতে পুলিশকে নিয়ে যৌথভাবে প্রচারের কাজ করা হচ্ছে।’’