Advertisement
E-Paper

করোনা-আবহে ‘ঝুঁকি’ নিয়ে চলছে ১০০ দিনের কাজ

ব্লক এবং পঞ্চায়েত স্তরে যাঁরা প্রকল্পটি রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছেন, সেই সব আধিকারিক তথা বিডিও, এপিও (সহকারী প্রকল্প আধিকারিক) এবং পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়কদের অনেকেরই অভিযোগ, কাজের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশেই এই ঝুঁকির কাজ করাতে হচ্ছে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২০ ০৩:২১
অসচেতন: শ্রীপুর জেলে পুকুরে চলছে মাটি কাটার কাজ। —নিজস্ব িচত্র

অসচেতন: শ্রীপুর জেলে পুকুরে চলছে মাটি কাটার কাজ। —নিজস্ব িচত্র

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ভিড় বা জমায়েত করা যাবে না বলে সরকারি স্তরে নিষেধ করা হচ্ছে। কিন্তু হুগলিতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে এক-একটি ক্ষেত্রে প্রায় ১০০ থেকে ৩০০ জন পর্যন্ত শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করে চলেছেন! কারণ, চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে আর ১১ দিন বাকি।

ব্লক এবং পঞ্চায়েত স্তরে যাঁরা প্রকল্পটি রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছেন, সেই সব আধিকারিক তথা বিডিও, এপিও (সহকারী প্রকল্প আধিকারিক) এবং পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়কদের অনেকেরই অভিযোগ, কাজের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশেই এই ঝুঁকির কাজ করাতে হচ্ছে। বাস্তব অবস্থা বিচার না-করেই কাজ তোলায় চাপ দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল করা হচ্ছে না।

এই অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। তাঁর দাবি, ‘‘কোথাও কোন অসুবিধা নেই। মানুষ কাজ চাইছেন। প্রত্যেক বিডিওকে বলা আছে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। শ্রমিকদের যে ভাবে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব (১ মিটার) রেখে কাজ করতে হবে, যে ভাবে হাত পরিষ্কার করা-সহ যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে তা নিয়ে বিডিও, এপিও, নির্মাণ সহায়কদের প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “করোনায় ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত কোনও গাইডলাইন আমাদের কাছে আসেনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে হুগলির ২০৭টি পঞ্চায়েতের জন্য শ্রমবাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৮৯ লক্ষ ৭৮২। শুক্রবার পর্যন্ত কাজ হয়েছে ১ কোটি ৫১ লক্ষ ২০ হাজার ৮২৫ শ্রমদিবসের। প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। লক্ষমাত্রা ছুঁতে বাকি আছে প্রায় ৩৮ লক্ষ শ্রমদিবসের কাজ।

যে ভাবে শ্রমিকদের কাজ করানো হচ্ছে, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে জেলার পঞ্চায়েতগুলির নির্মাণ সহায়কদের একটি সংগঠন। ওই সংগঠনের দাবি, এখানে জেলা থেকে কাজের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। তা পূরণ করতে শ্রমিক ধরে আনতে হয়। সংগঠনের পক্ষে আর্জি জানানো হয়েছিল, অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মতো ১০০ দিনের কাজও ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হোক। কিন্তু জেলা প্রশাসন অনড়।

শ্রমিকেরা যে ভাবে একযোগে কাজ করছেন, তাতে বিভিন্ন ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদেরই একজনের অভিযোগ, “আমরা খবর নিয়ে দেখেছি, বাইরের রাজ্যে সোনা-রুপোর কাজ করা শ্রমিকদের অনেকেরই জবকার্ড আছে। তাঁরা বাড়ি ফিরে এই কাজও করেন। এ রকম ঘটনা ঘটলে বাকি শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। তা ছাড়া, সংক্রমণ ঠেকাতে যে দূরত্ব বজায় রাখতে হয়, যে ভাবে নিজেকে পরিষ্কার রাখতে হয় সে সবও পালন হচ্ছে না ওই প্রকল্পের কাজে।” পুরো বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনা হয়েছে বলে তিনি জানান।

Coronavirus Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy