Advertisement
E-Paper

করোনায় কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকদের কী হবে?

মারণ ভাইরাসের জেরে অনেক অফিসে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ শুরু হয়েছে। কারখানার শ্রমিকদের কী হবে? সেখানে সচেতনতামূলক কোনও কর্মসূচি নেই। এই পরিস্থিতিতেও শ্রমিকেরা অসহায়। তাঁদের জন্য প্রশ্ন তুললেন পরিবেশ ও সমাজকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ইটখোলার দাপাদাপি। রাজ্যে প্রায় ৩৫০০ ইটখোলা রয়েছে। প্রত্যেক ইটখোলায় অন্তত ৫০০ মানুষ সপরিবারে বাস করেন।

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৪:১৭
ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

হুগলি-সহ পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র কারখানার চাকা চলছে। হাজার হাজার শ্রমিক কর্মরত। কিন্তু সেখানে নেই করোনা প্রতিরোধের কোনও কর্মসূচি। যদিও শ্রম দফতরের অধীনে কারখানার শ্রমিকদের স্বাস্থ্য দেখার জন্য মুখ্য কারখানা পরিদর্শক নিযুক্ত আছেন।

দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ইটখোলার দাপাদাপি। রাজ্যে প্রায় ৩৫০০ ইটখোলা রয়েছে। প্রত্যেক ইটখোলায় অন্তত ৫০০ মানুষ সপরিবারে বাস করেন। এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের হিসেব আইন অনুযায়ী সরকারি খাতায় নথিভুক্ত হওয়া উচিত। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের অস্তিত্ব সরকারি খাতায় নেই। ওঁরা অসহায়।

ওঁরা জানেন না করোনা কী। ওঁরা সর্বত্রই নানা ভাবে মৃত্যুর জন্য প্রতীক্ষারত।

আমরা প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার আগেই কিছু মানুষ ভোররাতে বেরিয়ে পরেন হাতে কোদাল-শাবল নিয়ে। ওঁরা পুর-এলাকার সাফাইকর্মী। ভোর থেকে শহরের বর্জ্য-আবর্জনা পরিষ্কার করেন। ওঁদের হাতে না আছে দস্তানা, না মাস্ক। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা— একই ভাবে ওঁরা কাজ করে চলেন আমাদের শহরকে সুন্দর, দূষণমুক্ত রাখতে। এঁরা জানেন না করোনা কী।

প্রতিনিয়ত রাজ্য থেকে কেন্দ্র— সর্বত্র করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনা চলছে। ঘরে-বাইরে কিন্তু একবারও কেউ উচ্চারণ করেননি যে করোনা সতর্কতায় কারখানা যদি বন্ধ থাকে, তা হলে শ্রমিকেরা মজুরি পাবেন কিনা! সাধারণ সময় শ্রমজীবী মানুষ তাঁদের ন্যায্য অধিকার না পেতে পেতে এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে গিয়েছেন যে ওঁরা আজ চাইতেও ভুলে যাচ্ছেন। সাধারণ নাগরিক সমাজ এ ব্যাপারে খুব চিন্তিত, এমন কথা বলা যায় না। সরকারি অফিস বা স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলে সবাই বেতন পাবেন। কিন্তু কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকেরা বেতন পাবেন কিনা, কেউ জানেন না।

আজ ‘জনতা কার্ফু’ ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু কাজ না-করলে যাঁদের পেটে টান পড়ে, তাঁরা কী করবেন? সরকারের কোনও উত্তর নেই। সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা বিশেষ কিছু মানুষের জন্য রক্ষিত। বাকিরা সবাই অবাঞ্ছিত! করোনাভাইরাস নিয়ে সবাই চিন্তিত। কারণ, ওই ভাইরাস আক্রমণের সময় কে ধনী, কে গরিব চিন্তা করে না। যদি এই ভাইরাস কোনও কারণে কেবলমাত্র গরিবদের আক্রমণ করত, তা হলে বোধ হয় বিশ্বজুড়ে এত প্রতিষেধকের খোঁজ চলত না।

করোনাভাইরাস আবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল এই পৃথিবী, এই দেশ, এই রাজ্য, এই শহর আজও ‘আমরা-ওরা’য় বিভক্ত। এই বিভাজনের রেখা কবে মুছবে, এখন তারই অপেক্ষা।

Coronavirus health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy