Advertisement
E-Paper

অমিল লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট, ক্ষোভ হুগলিতে

অনেকেরই বক্তব্য, সরকারি জায়গায় রিপোর্ট না পেয়ে মোটা টাকা গুনে বেসরকারি জায়গা থেকে পরীক্ষা করাচ্ছেন কেউ কেউ। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, রিপোর্ট পেতে দেরি হলে অনেক ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হয় না।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২০ ০৫:২৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

গলা ব্যথা, জ্বর-সহ করোনার নানা উপসর্গ ছিল শরীরে। শ্রীরামপুরের শঙ্কর গুহ গত ১২ অক্টোবর ওয়ালশ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলেন। তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাননি তিনি।

শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘আমি উচ্চ রক্তচাপের রোগী। সে জন্যই করোনা পরীক্ষা করাতে যাই। রিপোর্ট না-মেলায় বাড়ির লোকেরা চিন্তায় পড়ে যান। চিকিৎসকের কথা মেনে ২০ দিন গৃহ-নিভৃতবাসে কাটাই।’’ তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘‘চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সরকারি স্তরে নানা আশ্বাস শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি এমন হলে মানুষ যাবেন কোথায়?’’

শুধু শঙ্করবাবু নন, লালারসের নমুনা দিয়েও রিপোর্ট পাননি, হুগলিতে এমন উদাহরণ অনেক। জেলার এক পুলিশকর্মীর পরিচিত একজনের করোনা পজ়িটিভ হয়। ওই পুলিশকর্মী তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাই চিকিৎসকের পরামর্শে তিনিও করোনা পরীক্ষার জন্য সরকারি হাসপাতালে যান। কিন্তু রিপোর্ট মেলেনি বলে তাঁর দাবি। ওই পুলিশকর্মীও নিভৃতবাসে থেকে যান।

একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে করোনা-যুদ্ধে প্রথম সারিতে থাকা কর্মীকেও। বাঁকুড়ার সিমলাপালের বাসিন্দা ওই স্বাস্থ্যকর্মী হুগলির একটি কোভিড হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। উপসর্গ থাকায় পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা দিয়ে রিপোর্টের অপেক্ষায় তাঁরও দিন কেটেছে। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনিও নিভৃতবাসে থেকে সুস্থ হয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে সরব বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল। তাদের অভিযোগ, সংক্রমণের প্রকৃত সংখ্যা চেপে যেতেই এই ‘কারসাজি’। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘এখন প্রতিদিন র‌্যাপিড পরীক্ষার জন্য গড়ে দেড় হাজার এবং আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য গড়ে ১৮০০ নমুনা পাঠানো হচ্ছে। সাধারণত চার দিনের মধ্যেই রোগীরা রিপোর্ট মোবাইলে পেয়ে যান। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা থাকতে পারে।’’ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির করোনা নেগেটিভ হলে রিপোর্ট সাধারণত দেওয়া হয় না বলে ওই স্বাস্থ্যকর্তা জানান।

সরকারি আধিকারিক যা-ই বলুন, অনেকেরই বক্তব্য, সরকারি জায়গায় রিপোর্ট না পেয়ে মোটা টাকা গুনে বেসরকারি জায়গা থেকে পরীক্ষা করাচ্ছেন কেউ কেউ। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, রিপোর্ট পেতে দেরি হলে অনেক ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হয় না। চিকিৎসক শুভদীপ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়া (ভিটিআর) পদ্ধতিতে লালারসের নমুনা নিয়ে দ্রুত পরীক্ষা করা জরুরি। ওই নমুনা বরফে রাখতে হয়। নমুনা নষ্ট হয়ে গেলে পরীক্ষার মানে হয় না। তা ছাড়া, রিপোর্ট পেতে দেরি হলে চিকিৎসা শুরু করা যায় না। অনেক সময় এই দেরি রোগীর ক্ষেত্রে প্রাণঘাতীও হতে পারে।’’

Coronavirus in West Bengal COVID-19 Tests Hooghly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy