Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বিমার টাকা মেটাতে নির্দেশ ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির বিমার টাকা না পেয়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। আদালত সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাকে ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল। সঙ্গে ক্ষতিপূরণও। হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের ওই রায়ে চণ্ডীতলার কৃষ্ণরামপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ পাল খুশি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৭
Share: Save:

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির বিমার টাকা না পেয়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। আদালত সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাকে ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল। সঙ্গে ক্ষতিপূরণও। হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের ওই রায়ে চণ্ডীতলার কৃষ্ণরামপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ পাল খুশি।

আগে ভাড়া খাটানোর জন্য কয়েক বছর কৃষ্ণরামপুরের জলাপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বজিৎবাবু একটি চার চাকা গাড়ি কেনেন। হাওড়া, হুগলি এবং কলকাতায় ওই গাড়ি চালানোর জন্য পারমিট (কমার্শিয়াল পারমিট) বের করেন তিনি। ডানকুনির একটি বিমা সংস্থার সঙ্গে গাড়িটির বিমার ব্যাপারে চুক্তি করেন তিনি। ২০১৩ সালের ৭ ডিসেম্বর ভোরে বীরভূমের একটি মোটরবাইক গ্যারাজে গাড়িটি ধাক্কা মারে। এতে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়িটি মেরামত করাতে হয়। কয়েক দিন পরে ওই বিমা সংস্থায় গাড়ি সারানোর খরচ বাবদ টাকা দাবি করেন বিশ্বজিৎবাবু। তাঁর দাবি, গাড়ি সারাতে ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ওই টাকা তিনি বিমা সংস্থার কাছে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘টাকা দেওয়া যাবে না বলে ওই বিমা সংস্থা আমাকে জানিয়ে দেয়। কারণ হিসেবে জানানো হয়, পারমিট অনুযায়ী গাড়িটি হুগলি, হাওড়া অথবা হাওড়ায় চলার কথা। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটেছে বীরভূমে। পারমিট এলাকার বাইরে দুর্ঘটনা ঘটায় গাড়ি সারানোর খরচ দেওয়া সম্ভব নয়।’’

এর পরেই বিশ্বজিৎবাবু ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন। অভিযোগকারীর আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা করেন আদালতে। তিনি জানান, দুর্ঘটনা বীরভূমে ঘটেছে ঠিকই, কিন্তু সেখানে ব্যবসায়িক কাজে গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয়নি। বিশ্বজিৎবাবু পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ব্যক্তিগত কাজে সেখানে গিয়েছিল‌েন। বিমা সংস্থার তরফেও লিখিত ভাবে নিজেদের বক্তব্য জানানো হয়।

কাগজপত্র দেখে এবং দু’পক্ষের যুক্তি শুনে আদালতের পর্যবেক্ষণ, পারমিট এলাকার বাইরে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এটা ছাড়া বিশ্বজিৎবাবুর দাবি নিয়ে বিমা সংস্থার অন্য কোনও বক্তব্য ন‌েই। কিন্তু পারমিট এলাকার বাইরে দুর্ঘটনা ঘটলেও সেখানে ব্যবসার কাজে গাড়ি নিয়ে যান‌নি। গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত কাজে। সেই কারণে রুট পারমিটের প্রশ্নই আসে না। অন্য জায়গায় গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিমার অধিকার হারিয়ে যায় না। তা ছাড়া, টাকা দিয়েই ওই বিমার পলিসি কিনতে হয়। বিমা কোম্পানির দায়িত্ব, দাবি মতো সত্যিটা পরীক্ষা করে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া। প্রিমিয়াম জমা নেওয়ার পরেও দায়িত্ব অস্বীকার করে ওই সংস্থা অনৈতিক কাজ করেছে।

দিন কয়েক আগে আদালতের সভাপতি পার্থসারথি দাস এবং দুই সদস্য চন্দ্রিমা চক্রবর্তী ও নির্মলকুমার রায় ওই বিমা সংস্থাকে আদেশ দেন, গাড়ি সারানোর খরচ বাবদ ৭০ হাজার ৫০০ টাকা বিশ্বজিৎবাবুকে দিতে হবে। তাঁর হয়রানি এবং মানসিক যন্ত্রণার জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। এ ছাড়াও, মামলা চালানোর খরচ বাবদ আরও ৮ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের নির্দেশ, সব টাকাই এক মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে। তা না হলে রায় ঘোষণার দিন থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Insurance Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE