Advertisement
E-Paper

গলাকাটা দেহ মিলল অভিযুক্তের, ধৃত এক

পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুকেশ জৈন জানান, ধৃতের বিরুদ্ধে অস্ত্র সরবরাহ-সহ নানা অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আগে সে হাজতবাসও করেছে। আট বছর আগের খুন, তার পরে এক জনের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সঙ্গেও ধৃতের কোনও যোগ রয়েছে কিনা এবং তার সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০২
নিহত রাজেশ সাউ। ফাইল চিত্র

নিহত রাজেশ সাউ। ফাইল চিত্র

আট বছর আগে এলাকায় একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন দুই ভাই। ধরাও পড়েছিলেন। জামিন পাওয়ার পরে চার বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যান ছোট ভাই। বুধবার দাদার গলার নলিকাটা দেহ মিলল বাড়ির কাছেই গঙ্গার ধার থেকে।

মগরার চন্দ্রহাটি এলাকার বাসিন্দা রাজেশ সাউ (৩০) নামে নিহত ওই যুবক রবিবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওই বিকেলে রাজেশকে স্থানীয় দুষ্কৃতী অনিল তিওয়ারির সঙ্গে ঘুরতে দেখেছিলেন এলাকার কিছু লোকজন। একই দাবি ছিল রাজেশের পরিবারেরও। তাঁরা অনিলের বিরুদ্ধে রাজেশকে অপহরণের অভিযোগ জানিয়েছিলেন থানায়। তার ভিত্তিতে সোমবার অনিলকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই রাজেশের দেহ মেলে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত অপরাধ কবুল করে জানিয়েছে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে চিড় ধরায় সে রাজেশকে খুন করে। তবে, খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটি পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।

পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুকেশ জৈন জানান, ধৃতের বিরুদ্ধে অস্ত্র সরবরাহ-সহ নানা অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আগে সে হাজতবাসও করেছে। আট বছর আগের খুন, তার পরে এক জনের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সঙ্গেও ধৃতের কোনও যোগ রয়েছে কিনা এবং তার সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী কারণে দু’জনের সম্পর্কে চিড় ধরল, তারও তদন্ত হবে।

তবে নিহতের মা লীলাদেবীর অভিযোগ, ‘‘আট বছর আগের খুনেও অনিলই জড়িত। নিজেকে আড়াল করতে ও আমার ছেলেদের নাম জড়িয়েছিল। আমার বিশ্বাস, ছোট ছেলে মুকেশকেও ও খুন করে দেহ লোপাট করে দেয়। এ বার রাজেশকে মারল। ওর কঠোর শাস্তি চাই।’’ এ দিন দুই ছেলেকে খুনেই অনিলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রৌঢ়া।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে চন্দ্রহাটির বাসিন্দা অনিল মিশ্র খুন হন। তাঁর সঙ্গে ধৃত অনিল তিওয়ারি এবং রাজেশ-মুকেশের পরিচয় ছিল। ঠিক কী কারণে আট বছর আগের খুন, তা এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। কিন্তু তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রাজেশ-মুকেশকে ধরে। জামিন পেয়ে রাজেশ ফরিদাবাদে কাজের খোঁজে চলে যান। সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে তিনি ট্রলি করে মনোহারি জিনিস ফেরি করতেন। মুকেশ চন্দ্রহাটিতে মায়ের কাছেই থাকতেন। ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি মুকেশ।

চুঁচুড়া আদালতে অনিল খুনের মামলাটির শুনানির জন্য মাঝেমধ্যেই ফরিদাবাদ থেকে ফিরতেন রাজেশ। কিছুদিন আগেও আসেন। রবিবার দুপুরে অনিল তিওয়ারি তাঁর বাড়িতে এসে রাজেশের সঙ্গে কথা বলে বলে দাবি করেছেন লীলাদেবী। বিকেলে রাজেশও বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। সোমবার এলাকার কিছু লোক শর্মাঘাটের কাছে গঙ্গার ধারে প্রাতঃকৃত্য সারতে গিয়ে একটি মানিব্যাগ পড়ে থাকতে এবং ঘাসে জমাট বাঁধা রক্ত দেখতে পান। মানিব্যাগ খুলতেই তাতে রাজেশের ছবি দেখতে পান তাঁরা। খবর যায় পুলিশে। রাজেশের বাড়ির লোক ব্যাগটি শনাক্ত করেন।

অনিলকে গ্রেফতারের পরে বুধবার সকালে ওই ঘাটের কাছেই একটি পরিত্যক্ত বাড়ির পাশ থেকে রাজেশের গলাকাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তে চুঁচুড়া হাসপাতালে পাঠায়। রাজেশের স্ত্রী সঞ্জু মঙ্গলবার বিকেলে চন্দ্রহাটিতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অনিল মাঝেমধ্যেই রাজেশকে চন্দ্রহাটিতে আসার জন্য ফোন করত। আমি বলেছিলাম একসঙ্গেই যাব। কিন্তু সে কথা না শুনে রাজেশ আগেই চলে আসে। গত রবিবার সকালের দিকে ওঁর সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল। এখন পরিষ্কার, স্বামীকে খুন করার জন্যই অনিল ডাকছিল। ও-ই দেওরকেও মেরেছে।’’

Magra Dead Body Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy