Advertisement
E-Paper

ফ্ল্যাট থেকে বৃদ্ধার কঙ্কাল মিলল বালিতে

তিনি কৈলাস ব্যানার্জি লেনে নমিতাদেবীর চারতলার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন, বাইরের কোল্যাপসিবল গেটে তালা ঝুলছে। ফ্ল্যাটের দরজাও ভিতর থেকে বন্ধ। বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘বারবার দরজায় ধাক্কা দিয়েও কোনও সাড়া না মেলায় পুলিশকে গিয়ে জানাই।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৩৪
ভিন ধর্মে প্রেমের কারণে বিহারে খুন কিশোর কিশোরী। প্রতীকী ছবি।

ভিন ধর্মে প্রেমের কারণে বিহারে খুন কিশোর কিশোরী। প্রতীকী ছবি।

প্রায় এক মাস ধরে পিসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না ভাইপো। এমনকী, ওই বৃদ্ধাকে দেখতেও পাননি আবাসনের অন্য বাসিন্দারা। শেষে ভিন্ রাজ্য থেকে ভাইপো এসে দেখলেন, ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বহু ডাকাডাকিতেও কোনও সাড়া মিলছে না। পরে পুলিশ এসে তালা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই দেখা গেল, শোয়ার ঘরের মেঝেতে চাদর চাপা দেওয়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই বৃদ্ধার কঙ্কাল। তাতে পচাগলা মাংসও লেগে রয়েছে!

বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বালির কৈলাস ব্যানার্জি লেনে। পুলিশ জানায়, ওই বৃদ্ধার নাম নমিতা দাস (৭০)। তিনি বিয়ে করেননি। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর কঙ্কালটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে বালি থানার পুলিশ জেনেছে, ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন নমিতাদেবী। দেহরাদূনে তাঁর ছোট বোনের এবং ভাইপোর বাড়ি।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৪ নভেম্বর সকালে ফোন করে নমিতাদেবীর সঙ্গে কথা বলেন তাঁর ভাইপো বিশ্বনাথ দাস। তিনি জানিয়েছেন, ওই দিনই রাতের দিকে ফের পিসির মোবাইলে ফোন করলে তা বেজে যায়। এর পর থেকে বেশ কয়েক দিন ধরে টানা ফোন করলেও তা ধরেননি নমিতাদেবী। কয়েক দিন আগে ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। সন্দেহ হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যায় দেহরাদূন থেকে বালিতে চলে আসেন বিশ্বনাথ। তিনি কৈলাস ব্যানার্জি লেনে নমিতাদেবীর চারতলার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন, বাইরের কোল্যাপসিবল গেটে তালা ঝুলছে। ফ্ল্যাটের দরজাও ভিতর থেকে বন্ধ। বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘বারবার দরজায় ধাক্কা দিয়েও কোনও সাড়া না মেলায় পুলিশকে গিয়ে জানাই।’’

পুলিশ জানায়, এর পরেই বালি থানার আইসি বিকাশ দত্তের নেতৃত্বে মহিলা পুলিশ-সহ একটি দল ওই আবাসনে যায়। ভাঙা হয় কোল্যাপসিবল গেটের তালা ও দরজা। ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকতেই পচা গন্ধ ভেসে আসে। দেখা যায়, শোয়ার ঘরে খাটের নীচে মেঝেতে চাদর জড়ানো অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই বৃদ্ধা। চাদর সরাতেই দেখা যায়, একেবারে পচে-গলে কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে ওই বৃদ্ধার। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ২৪ নভেম্বর রাতে কিংবা পরের দিন ভোরেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে কিংবা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যার কারণেই ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছিল। তদন্তকারীদের মতে, নমিতাদেবী সম্ভবত খাট থেকে মেঝেতে পড়ে গিয়েছিলেন।

কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে কেউ গন্ধ পেলেন না কেন?

প্রতিবেশীদের দাবি, পুরো ফ্ল্যাটটির সমস্ত জানলা-দরজা বন্ধ ছিল। আর রাস্তার দিকে বৃদ্ধার শোয়ার ঘর হওয়ায় মাঝেমধ্যে
অল্প গন্ধ বেরোলেও তা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাননি। প্রতিবেশীদের দাবি, ফ্ল্যাটের কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না ওই বৃদ্ধা। ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখতেন। আর এক প্রতিবেশী নিমাই চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেউ ডাকলেও মাসিমা দরজা খুলতেন না। সাড়াও দিতেন না।’’ বিশ্বনাথ জানান, মাঝেমধ্যেই দেহরাদূনে গিয়ে ছোট বোনের কাছে থাকতেন নমিতাদেবী। কখনও আবার হরিদ্বার, বারাণসী-সহ বিভিন্ন জায়গায় তীর্থ করতে চলে যেতেন। বছর দশেক আগে গঙ্গার কাছাকাছি থাকার জন্যই তিনি বালিতে ওই ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন।

Woman Dead
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy