আশ্রয়: মায়ের সঙ্গে শেখ সাহিল। বুধবার উলুবেড়িয়া থানায়। নিজস্ব চিত্র
রাতের অন্ধকারে বছর নয়েকের বালকটিকে ঘুরতে দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। তার নাম-ধাম জিজ্ঞাসা করতেই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল ছেলেটি। পরে অবশ্য বোঝা যায়, সে কথা বলতে ও শুনতে পায় না। তবে পুলিশের তৎপরতায় শেখ সাহিল নামে ওই বালকটির পরিবারের সন্ধান মিলেছে। বুধবার উলুবেড়িয়া থানা থেকে মায়ের হাত ধরে বাড়ি ফিরেছে ওই খুদে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে উলুবেড়িয়া পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বাহিরতফায় ওই শিশুটির খবর পেয়েই হাজির হয়েছিল পুলিশ। তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। রাতভর তার সঙ্গে ভাব-বিনিময় করে চলে ঠিকানা খোঁজার পালা। তবে সমাধান মেলেনি। পরে পুলিশকর্মীরা ঠিক করেন, ছেলেটিকে হাওড়ার হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বুধবার সকালে সেই ব্যবস্থাও সারা। ততক্ষণে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে দিব্যি ভাব জমিয়ে ফেলেছে ছেলেটি। তাকে গাড়ি করে হোমে পাঠানোর সময় কাঁদতে শুরু করে দেয় সে। পরে বুঝিয়ে তাকে গাড়ি চাপিয়ে পাঠিয়েও দেওয়া হয়।
উলুবেড়িয়া থানার আইসি কৌশিক কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন থানা এলাকায় ছেলেটির ছবি পাঠিয়ে খোঁজ শুরু করি। সেই সময়ই খবর আসে, বাউড়িয়ার খাজুরি গ্রামের এক মহিলার মূক-বধির ছেলে নিখোঁজ।’’ দুপুর তিনটে নাগাদ রমিশা বেগম নামে ওই মহিলা থানায় এসে জানান, ছেলেটি তাঁরই সন্তান। ছেলের সঙ্গে নিজের ছবিও দেখান তিনি।
রমিশার কথায়, ‘‘দশ বছর আগে স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছে। দুই সন্তানকে ঘরে রেখে পরিচারিকার কাজ করি। সাহিল ছোট। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি ফিরে দেখি সাহিল নেই। সারা রাত ঘুমোতে পারিনি।’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়া থানার পুলিশের তরৎপরতায় ওই মূক-বধির বালকটি পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছে। এটা আমাদের কাছেও আনন্দের বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy