Advertisement
০৫ মে ২০২৪
House

ত্রাণ তহবিল থেকে টাকা ফেরতের দাবি

যে সব উপভোক্তার টাকা কাটা হয়েছে, তা ফেরত দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে পুর প্রশাসক স্বপন নন্দী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হওয়ায় পুর কমিটিতে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

সরকারি প্রকল্পের বাড়ি। আরামবাগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। —নিজস্ব চিত্র

সরকারি প্রকল্পের বাড়ি। আরামবাগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:৩৪
Share: Save:

একজন অভিযোগ তুলেছেন। তা জানতে পেরে আরামবাগ পুর এলাকার ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের একাধিক উপভোক্তা তাঁদের বরাদ্দ থেকে পুরসভার ত্রাণ তবহিলে কেটে নেওয়া ১৮ হাজার টাকা ফেরতের দাবি তুলতে শুরু করলেন। ইতিমধ্যে যাঁদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে, তাঁরাও সেই টাকা দিতে আপত্তি তুলেছেন। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদুরের শেখ আজিজুল হকের কথাই ধরা যাক। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। পুরসভা ১৮ হাজার টাকা কেটে নেবে বলেছিল। বিষয়টা বেআইনি জানতে পেরেছি যখন, সেই টাকা দেব না।’’

যে সব উপভোক্তার টাকা কাটা হয়েছে, তা ফেরত দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে পুর প্রশাসক স্বপন নন্দী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হওয়ায় পুর কমিটিতে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, পুর এলাকায় মোট সাড়ে ৯ হাজার বাড়ি করে দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। নির্মাণের পর সেখানকার পরিকাঠামো (রাস্তা, নিকাশি ইত্যাদি) খাতে বাড়িপিছু প্রায় ১৮ হাজার টাকা খরচ হবে। সে ক্ষেত্রে ১৭ কোটি টাকারও বেশি পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে দিতে হবে। পুরসভার সেই তহবিল নেই। এই অবস্থায় যে সব উপভোক্তা নিজেরা পরিকাঠামো খাতের খরচ বহন করতে আগ্রহী ছিলেন, তাঁদের থেকেই ওই টাকা নেওয়া হয়।

স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এখন অভিযোগ ওঠায় পুর কমিটিতে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ালে দুঃস্থ পুরসভা এবং দুঃস্থ উপভোক্তাদের উপর চাপ পড়ত না।” ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পের উপভোক্তাদের বরাদ্দ থেকে আরামবাগ পুরসভার ত্রাণ তহবিলে ১৮ হাজার টাকা করে কেটে নেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। গত বৃহস্পতিবার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লিশ্রীর বাসিন্দা খন্দকার আনসার আলি কিছু নথি পাঠিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানান। তার পাঠানো নথিতে অর্চনা অধিকারী নামে এক উপভোক্তার টাকা কেটে নেওয়ার বিষয়টি রয়েছে। অর্চনা বলেন, ‘‘আমি গরিব মানুষ। তেলেভাজা বিক্রি করে সংসার চালাই। আমার ওই টাকা ফেরত দেওয়া হোক।’’

এ ছাড়া, বাড়ি তৈরির কাজ শুরুর আগে উপভোক্তার ব্যাঙ্কের পাশবই এবং চেকবই নিয়ে রাখা নিয়েও পুরসভার বিরুদ্ধে কম অভিযোগ নেই। গত ২৫ জুন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লেকপাড়ার বাসিন্দা বিকাশ চৌধুরী নামে এক উপভোক্তা আরামবাগের মহকুমাশাসকের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান। তার জেরে বিকাশ অবশ্য তাঁর পাশবই এবং চেকবই সম্প্রতি ফেরতও পেয়েছেন। নতুন উপভোক্তাদের পাশবই বা চেকবই আর রাখছে না পুরসভা।

পুর প্রশাসক স্বপন বলেন, ‘‘উপভোক্তারা গৃহ নির্মাণ না করে টাকা খরচ করে ফেলছিলেন। টাকার সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত শংসাপত্র দেওয়া যাচ্ছিল না। সে কারণে পরবর্তী বরাদ্দের টাকা পেতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই উপভোক্তাদের পাশবই এবং চেকবই পুরসভার কাছে থাকছিল। অভিযোগ ওঠার পর সেটা রাখা হচ্ছে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Awas Yojana House Govt House
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE