Advertisement
E-Paper

দেরিতে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র, দুর্ভোগ

ফুলেশ্বরের বছর আঠারোর অর্ঘ্য রায় দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী শংসাপত্র রয়েছে তাঁর। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি আক্রান্ত সেরিব্রাল পালসিতেও।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০১:৪৪

ফুলেশ্বরের বছর আঠারোর অর্ঘ্য রায় দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী শংসাপত্র রয়েছে তাঁর। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি আক্রান্ত সেরিব্রাল পালসিতেও। বহুমুখী প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর অভিযোগ, বিস্তর নাকাল হতে হচ্ছে তাঁকে।

নিয়ম হল, কেউ প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট চাইলে তাঁকে বহির্বিভাগে নাম লেখাতে হয়। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় জরুরি বিভাগে। সেখান থেকেই বলে দেওয়া হয় কোন চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করবেন। ওই চিকিৎসক পরীক্ষা করার পর সেই রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার জন্য চিকিৎসকের বোর্ড বসে। সেই বোর্ডই সার্টিফিকেট দেয়।

অর্ঘ্যর দাবি, তিনি বহির্বিভাগে নাম লেখানোর পরে জরুরি বিভাগে যান। সেখান‌ থেকে তাঁকে বলা হয় মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করবেন। অর্ঘ্যর অভিযোগ, দিনের পর দিন হাসপাতালে এসে ঘুরে গেলেও কোনও মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করেননি। এই বিভাগ থেকে শুধু একের পর এক তারিখ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বাবা দিলীপ রায় পেশায় ঘড়ির কারিগর। তিনি বললেন, ‘‘এমনিতেই ছেলে দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী। তার উপরে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। বারবার ছেলেকে হাসপাতালে আনতে আমাদের কী যে নাকাল হতে হচ্ছে তা বলার নয়!’’

এই সমস্যা শুধু অর্ঘ্যর নয়। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ৯টি ব্লক থেকে সপ্তাহে গড়ে অন্তত ২০০ জন আসেন প্রতিবন্ধী সংক্রান্ত সার্টিফিকেট নিতে। চিকিৎসককে দেখানো থেকে শুরু করে বোর্ড থেকে সার্টিফিকেট নেওয়া পর্যন্ত গড়ে সময় লাগে মাসখানেক। কিন্তু এই হাসপাতালে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট পেতে আবেদনকারীদের দু’তিন মাস লেগে যায় বলে অভিযোগ।

বধিরদের সার্টিফিকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত একটি সমস্যা রয়েছে। তা হল কানের অডিওগ্রাম করাতে হয়। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে এই ব্যবস্থা নেই। এর জন্য চিকিৎসকেরা বধিরদের পাঠিয়ে দেন হাওড়া জেলা হাসপাতালে। সেখানে একদিন গিয়ে পরীক্ষা কবে হবে সেই তারিখ জেনে আসতে হয়। সেই তারিখে পরীক্ষা হলেও সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট দেওয়া হয় না। অন্য আরেক দিন যেতে হয় রিপোর্ট আনতে।

রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর হাওড়া জেলা সম্পাদক অজয় দাস বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্রবণ সংক্রান্ত প্রতিবন্ধীরা আসেন। তাঁদের হাওড়া জেলা হাসপাতালে যাতায়াত খুব কঠিন। আমরা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে দাবি জানিয়েছি উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালেও যেন অডিওগ্রামের ব্যবস্থা করা হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে যাতে সময়মতো প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দেওয়া হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘সরকারের পরিকল্পনা হল আপাতত জেলা হাসপাতালগুলিতেই অডিওগ্রাম করানো হবে। তবে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালেও যাতে অডিওগ্রাম করানো হয় সে জন্য আমি স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি লিখেছি।’’ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে সময়মতো প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট না পাওয়ার অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এটা বাঞ্ছনীয় নয়। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’’

Disabled Certificate Distribution delay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy