Advertisement
E-Paper

চেম্বারে ঢুকে বেধড়ক মার ডাক্তারকে, প্রশ্নে পুলিশ

ডিসপেনসরিতে ভিড় থাকায় এক রোগীর বাড়িতে যেতে দেরি হবে বলেছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ ওই চিকিৎসককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল ওই রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক বিজেপি নেতাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল শিবপুর শালিমার পিটিআর সাইডিং এলাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ০০:২২
জখম চিকিৎসক। — নিজস্ব চিত্র

জখম চিকিৎসক। — নিজস্ব চিত্র

ডিসপেনসরিতে ভিড় থাকায় এক রোগীর বাড়িতে যেতে দেরি হবে বলেছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ ওই চিকিৎসককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল ওই রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক বিজেপি নেতাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল শিবপুর শালিমার পিটিআর সাইডিং এলাকা।
পুলিশ জানায়, চোখে গুরুতর আঘাত নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি আতাউল্লা আনসারি নামে ওই চিকিৎসক। স্থানীয় বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণ উপাধ্যায়কে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আতাউল্লাবাবু ও রামকৃষ্ণবাবুর তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হলেও বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি। এক পুলিশকর্তার সাফাই, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের কোনও মতেই রেয়াত করা হবে না।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শিবপুর কাজীপাড়ার বাসিন্দা, চিকিৎসক আতাউর আনসারি দীর্ঘ দিন ধরেই হাওড়ার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের শালিমার পিটিআর সাইডিং এলাকায় একটি ডিসপেনসরি চালান। ওই এলাকাতেই থাকেন দিলীপ সিংহ নামে এক পরিবহণ ব্যবসায়ী। সোমবার রাতে চেম্বারে বসে রোগী দেখছিলেন আতাউল্লা। তখন দিলীপের মেয়ে এসে জানান, তাঁর দাদা অসুস্থ, তাই বাড়িতে যেতে হবে। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, রোগীর ভিড় থাকায় যেতে দেরি হবে। অভিযোগ, এর পরেই দিলীপ ও তাঁর ভাই অমিত সিংহ দলবল নিয়ে ডিসপেনসরিতে এসে চড়াও হন। কেন খবর পেয়েই চিকিৎসক জাননি, সে কৈফিয়ত চেয়ে শুরু হয় চড়থাপ্পড় মারা। বুধবার আতাউল্লা বলেন, ‘‘মারধর করে যাওয়ার সময়ে ওরা হুমকি দিয়ে গিয়েছিল, ডিসপেনসরি খুললে ভেঙে দিয়ে যাবে।’’
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার প্রথমে ভয়ে ডিসপেনসারি খোলেননি আতাউল্লা। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিনয় সিংহ ফোন করে তাঁকে অভয় দেন ডিসপেনসারি খুললে কেউ কিছু বলবে না। অভয় পেয়ে মঙ্গলবার ডিসপেনসারি খোলেন আতাউল্লা। অভিযোগ, রোগী দেখার সময় ফের দলবল নিয়ে হাজির হন দিলীপেরা। রোগীদের সামনেই ওই চিকিৎসককে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ডান চোখে গুরুতর নিয়ে রাতেই আতাউল্লাবাবুকে হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও অভিযোগ, বুধবার সকালে এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই ওয়ার্ডের বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণবাবুর উপরে চড়াও হয় দিলীপের দল। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদেরও তাড়া করে দিলীপের দলবল।

কে এই দিলীপ?

স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূল কাউন্সিলর বিনয় সিংহের ঘনিষ্ঠ এই পরিবহণ ব্যবসায়ী। লোহা চুরি থেকে এলাকায় চোলাই মদ বিক্রি-সহ বহু বেআইনি কাজের অভিযোগ রয়েছে দিলীপের বিরুদ্ধে। যদিও বিনয়বাবুর দাবি, ‘‘নির্বাচনের সময় সকলেই কাজ করেন। উনিও তেমনই করেছেন। এখন তো সকলেই তৃণমূলকর্মী।’’

তাঁর আশ্বাসেই তো ডিসপেনসরি খুলেছিলেন চিকিৎসক, তা হলে ফের আক্রান্ত হতে হল কেন? বিনয়বাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘এলাকায় মারামারি ও গণ্ডগোল রোজকার ঘটনা হয়ে গিয়েছে। সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করা তো সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশকে বলেছি যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।’’

doctor patient relative Dilip Singha Trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy