Advertisement
E-Paper

আরামবাগে অপচয় হচ্ছে পানীয় জল

চাষের খেতে জল লাগবে, ভরসা ট্যাপকল। কোথাও আবার সেই কলের মুখই নেই। দিনভর জল পড়েই যাচ্ছে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৫৮
নষ্ট: জল এলে বেশিরভাগ সময়েই চোখে পড়ে এই ছবি। আরামবাগের পাড়ের ঘাট।

নষ্ট: জল এলে বেশিরভাগ সময়েই চোখে পড়ে এই ছবি। আরামবাগের পাড়ের ঘাট।

কোনও বাড়ির ট্যাঙ্ক উপচে জল পড়েই যাচ্ছে। কোথাও আবার রাস্তার কলে গরুর গা ধোয়ানো চলছে।

চাষের খেতে জল লাগবে, ভরসা ট্যাপকল। কোথাও আবার সেই কলের মুখই নেই। দিনভর জল পড়েই যাচ্ছে।

যে কোনও দিন আরামবাগ শহরে এক চক্কর দিলেই এ দৃশ্য দেখা যায়। প্রতিদিন এ ভাবে শহরের পানীয় জলের অপচয় হচ্ছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। শহরের বিদ্বজ্জনদের একাংশ এ নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার তদ্বিরও করেছেন। কিন্তু পুরসভা উদাসীন বলে অভিযোগ।

পুরসভার ১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টি শহরকেন্দ্রিক। বাকিগুলি গ্রামকেন্দ্রিক। মূলত গ্রামকেন্দ্রিক ওয়ার্ডেই পানীয় জলের অপচয় সবচেয়ে বেশি বলে অভিযোগ। পুরসভার হিসেবই বলছে, প্রতি মাসে শহরে পানীয় জলের জোগান দিতে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়। বাম আমলে জল-কর বাবদ বছরে আয় হতো প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। কিন্তু এখন সাধারণ মানুষকে জল-কর দিতে হয় না। শুধু বাণিজ্যিক ক্ষেত্রগুলি থেকে আয় হয় মাত্র ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৬১৫ টাকা। এই হিসেবেই পরিষ্কার, ক্ষতি স্বীকার করেও পুরসভা পানীয় জল সরবরাহ করছে।

বিদ্বজ্জনদের একাংশের অভিযোগ, পুর এলাকায় রোজ অন্তত ৬০ শতাংশ পানীয় জলের অপচয় হয়। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আন্দিমহলের বাসিন্দা, আরামবাগ গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ সাজিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ ভাবে পানীয় জলের অপচয় চলতেই থাকলে ভবিষ্যতে সঙ্কট দেখা দিতে পারে। পুরসভার বিষয়টায় গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’’একই রকম আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফাঁড়ি সংলগ্ন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শিক্ষক বিমল সরকার, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসক শঙ্কর রায়ও।

গৌরহাটি মোড়।

জলের অপচয়ের কথা মেনে নিয়েছেন আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। একই সঙ্গে জানিয়েছেন নিজেদের অসহায়তারও কথা। তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পুরবাসীকে নিখরচায় জল সরবরাহ করছি। কিন্তু অপচয় রুখতে ধারাবাহিক সচেতনতা-প্রচারেও সার্বিক সাড়া মিলছে না। বাড়ির জলের ট্যাঙ্কে বিশেষ ভাল্ভ লাগাতে বললেও অনেকেই উদাসীন। রাস্তার কোনও ট্যাপকলের মুখ ভেঙে গেলেও আমাদের খবর দেওয়া হয় না। ’’ একই সঙ্গে অবশ্য পুরপ্রধান দাবি করেছেন, ‘’৩৪-৪০ শতাংশের বেশি জল অপচয় হয় বলে মনে হয় না। অপচয় রুখতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হবে।”

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯টি ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৬৬ হাজার ৭৯ জন। রয়েছে পাঁচটি রিজার্ভার। তাতে প্রতিদিন ৯.৪ মিলিয়ন লিটার জল তোলা হয়। এ জন্য পাম্প হাউস রয়েছে ২৮টি। মফস্সল শহরে প্রতিদিন মাথাপিছু ৭০ লিটার জল সরবরাহের নিয়ম। মেট্রো-শহরে যা ১৩৫ লিটার। কিন্তু আরামবাগে প্রতিদিন ১৩৬ লিটারের কিছু বেশি জল সরবরাহ করা হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৫ দফায় মোট ৮ ঘণ্টা জল সরবরাহ করা হয়।

সেই জলেরই অপচয় কবে বন্ধ হয়, এখন সেটাই দেখার।

ছবি: মোহন দাস

Water Arambagh Drinking water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy