Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

চাষজমি নষ্টের অভিযোগ নিয়ে থানায়, গোলমাল

তার প্রতিবাদে এবং জ মি নষ্টের অভিযোগ জানাতে রবিবার সন্ধ্যায় জনা পনেরো চাষি থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। সেই সময়  একজনকে মারধর করে গ্রেফতার করে বাকিদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আরামবাগ থানার আইসির বিরুদ্ধে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০৬
Share: Save:

পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের কাজে ভূগর্ভ থেকে তোলা এঁটেল এবং পাথুরে মাটি জমিতে ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে আরামবাগের সালেপুর অঞ্চলের চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার অভিযোগ দায়ের হয় মুর্শেদ আলি নামে এক চাষির বিরুদ্ধে।

তার প্রতিবাদে এবং জমি নষ্টের অভিযোগ জানাতে রবিবার সন্ধ্যায় জনা পনেরো চাষি থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। সেই সময় একজনকে মারধর করে গ্রেফতার করে বাকিদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আরামবাগ থানার আইসির বিরুদ্ধে। তবে ওই ব্যক্তি এই বিষয়ে লিখিত কোনও অভিযোগ জানাননি।

অভিযোগ অস্বীকার করে আইসি পার্থসারথি হালদার বলেন, ‘‘কাউকে মারধর করা হয়নি। থানায় পুলিশের কাজে বাধা, অভব্য আচরণ ও পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অনুপকুমার পাল নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” ধৃতকে সোমবার আরামবাগ আদালতে পাঠানো হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

মহকুমা প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭৬৫ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন মেদিনীপুর থেকে জিরাট পর্যন্ত জাতীয় গ্রিড প্রকল্পটির আরামবাগের রামনগর-মোবারকপুর মৌজায় কাজ শুরু হয় জানুয়ারি মাসের গোড়ায়। শুরুতে সংশ্লিষ্ট চাষিদের ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নিয়ে বিক্ষোভে দিন কুড়ি কাজ বন্ধ থাকে। চাষিদের দাবি ছিল, টাওয়ারের অংশের ক্ষতিপূরণ তো দিতেই হবে। পাশাপাশি ওই জমি এবং অন্যান্য জমির যে চাষের ক্ষতি হচ্ছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সে সময় মহকুমাশাসক তড়িঘড়ি বৈঠক ডেকে চাষ এলাকার ক্ষতিপূরণের দাবি মেটানোর সিদ্ধান্ত হয়।

তারপর থেকে কাজও চলছিল। মাঝে বর্ষার জন্য মাস কয়েক কাজ বন্ধের পর দিন কুড়ি হল ফের পাওয়ার গ্রিডের কাজ শুরু হয়েছে। চাষিদের অভিযোগ, প্রায় ২৫ ফুট করে গর্ত করে জমির টাওয়ার পোঁতায় ভূগর্ভের এঁটেল আর পাথুরে মাটি জমিতে উঁচু করে জমিয়ে রাখা হয়েছিল। সেগুলো জমিতে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আলু চাষের ওই এলাকা রিভার পাম্প এবং ছোট গভীর নলকূপের সেচের উপর নির্ভরশীল। চাষিদের অভিযোগ, ভূগর্ভের ওই অনুর্বর পাথুরে মাটি জমিতে ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে অন্যান্য জমি থেকে সেই জমি প্রায় এক ফুট উঁচু হয়ে গিয়েছে। তার ফলে সেচের জল ওই জমিতে আর ধরে রাখা যাবে না। আবার ওই জমিকে পুনরায় উর্বর চাষযোগ্য করতে বছর দশেক লেগে যাবে।

রবিবার ঘটনা নিয়ে অনুপের অভিযোগ, ‘‘আড়াই ঘন্টা অপেক্ষা করার পর আইসি ডেকেছিলেন আমাদের। তাঁর ঘরে ঢুকতেই জানতে চাইলেন, কে তাঁকে ফোন করেছে। আমি নিজের কথা বলতেই মারধর করে লকআপে ঢোকালেন।” প্রত্যক্ষদর্শী মোবারকপুর গ্রামের আনিসুল হকের অভিযোগ, ‘‘অনুপকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছিলাম। আমাকে বললেন, এখুনি দলবল নিয়ে চলে যেতে। না গেলে সবাইকে লক আপে ঢোকাবেন।” এই গ্রেফতারি নিয়ে এলাকার চাষিদের ক্ষোভ তুঙ্গে।

রামনগরের সুকুমার বারিক, গৌরাঙ্গ কর্মকার, মাধবচন্দ্র হালদার, মোবারকপুরের জগন্নাথ পাল প্রমুখর অভিযোগ, “চাষিদের না ডাকলে কী সরাসরি থানার আইসি বা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলা যায় না! এই নিয়ে আমরা ‘দিদিকে বলো’তে জানতে চাই। জেলাশাসকের কাছেও বার্তা পাঠাতে চাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arambag Farming Land Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE