প্রতীকী চিত্র।
পাচারকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক নাবালিকাকে রাজস্থানে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে শনিবার রাতে মেয়েটির সৎবাবাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে নাবালিকাটিকেও। শনিবার রাতে বাউড়িয়ার ঘটনা। রবিবার নাবালিকার বাবা-সহ চারজনকে উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। নাবালিকাটিকে পাঠানো হয় লিলুয়া হোমে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১৫ নভেম্বর বাউড়িয়ার বাগপাড়া থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় বছর তেরোর ওই নাবালিকা। অনেক খুঁজেও মেয়েকে না পেয়ে গত ১০ ডিসেম্বর বাউড়িয়া থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তার মা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সাবিনা ইয়াজমিন নামে এক পড়শি ওই নাবালিকাকে ভিনরাজ্যে কাজে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। নাবালিকার মা রাজি হননি। কয়েকদিন পর নাবালিকাটি নিখোঁজ হয়ে যায়। গ্রেফতার করা হয় সাবিনাকে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, সাঁকরাইলের দুই মহিলা তার কাছে এসেছিল ওই নাবালিকাকে ভিনরাজ্যে কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সে ওই নাবালিকার সঙ্গে দুই মহিলার পরিচয় করিয়ে দেয়। এমনকি নাবালিকাটি যাতে ওই দুই মহিলার সঙ্গে যায় সে ব্যাপারে মধ্যস্থতাও করে। এরপর গ্রেফতার করা হয় হেনা বেগম এবং সাহানারা শেখ নামে ওই দুই মহিলাকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ওই নাবালিকাকে বিক্রি করা হয়েছে রাজস্থানের বরোলি থানার নাহারবাড়ির এক ব্যক্তির কাছে।
এরপর ৬ জনের বিশেষ দল গঠন করে পুলিশ রাজস্থানে রওনা দেয়। স্থানীয় থানার সাহায্য নিয়ে নাহারবাড়ি গ্রামে হানা দিলেও পুলিশ যে ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ের জন্য নাবালিকাটিকে বিক্রি করা হয়েছিল তাকে ধরতে পারেনি। পুলিশ আসার খবর পেয়ে ওই ব্যক্তির পরিবারের সকলেই নাবালিকাকে ফেলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়ে ওই নাবালিকাকে। শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ নাবালিকাটিকে নিয়ে বাউড়িয়া থানায় আসে।
নাবালিকাটি জানিয়েছে, সৎবাবা তার উপরে নিয়মিত যৌন নির্যাতন করত। মা বিষয়টি জানতে পেরে আপত্তি করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। ওই নাবালিকার দাবি, সাবিনা, হেনা এবং সাহানারা তার সৎবাবার সঙ্গে আলোচনা করেই তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে চলে যায়। সৎবাবার যৌন নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার আশায় সেও কোনও আপত্তি করেনি। এরপরেই নাবালিকার সৎবাবাকে পুলিশ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের দাবি, মেয়েটিকে বিক্রি করে মোট ২১ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল। নাবালিকাটির সৎবাবা তার থেকে নিয়েছে ১০ হাজার টাকা। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, বাবা নিজে পাচারচক্রের অংশীদার হয়ে মেয়েকে বিক্রি করল, এটা সাধারণত দেখা যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy