স্নেহাশিস দাশগুপ্ত।—ফাইল চিত্র।
পোর্ট ট্রাস্টের গোলরক্ষক স্নেহাশিস দাশগুপ্ত ওরফে রাজার মৃত্যু-মামলায় সোমবার জামিন পেলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল নেতা পিন্টু নাগ। এ দিনই জামিন পেয়েছেন কালীরঞ্জন দাস এবং প্রতাপ মণ্ডল নামে আরও দুই অভিযুক্তও।
সোমবার শ্রীরামপুর আদালতের এসিজেএম মৃণালকান্তি মণ্ডলের এজলাসে পিন্টুবাবু-সহ তিন জনের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী রঞ্জন সরকার। আদালতকে তিনি জানান, ঘটনার ৯০ দিন পরও পুলিশ চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি। তাই, তাঁদের যেন জামিন দেওয়া হয়। বিচারক আর্জি মঞ্জুর করেন।
কিন্তু কেন চার্জশিট দাখিল করা গেল না? পুলিশের দাবি, ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। আরও কয়েকজনের নাম এই ঘটনায় উঠে আসছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। যথাসময়ে চার্জশিট দেওয়া হবে।
এ দিকে, ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রবিবার রাতে অনিল চৌধুরী ওরফে ভোলা নামে নতুন মাহেশ এলাকার এক যুবককে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। ভোলা স্থানীয় একটি কারখানার নিরাপত্তারক্ষী। শ্রীরামপুর আদালতের নির্দেশে তাঁকে ৭ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। ফলে এই ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল সাত।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, দশমীর ভোরে শ্রীরামপুর মাল গুদামের কাছে রেললাইনে তারাপুকুর সরকারি আবাসনের বাসিন্দা রাজার দেহ মেলে। প্রাথমিক ভাবে রেল পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। ২ অক্টোবর রাজার পরিবারের তরফে পিন্টুবাবু, তাঁর স্ত্রী তথা শ্রীরামপুরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী নাগ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে শেওড়াফুলি থানায় খুন ও প্রমাণ লোপের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরের দিন পিন্টু, কালীরঞ্জন এবং প্রতাপকে ধরে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, নবমীর রাতে রিন্টু এবং পাপান নামে দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে রাজার মারামারি হয়। রিন্টু-পাপান মৌসুমীদেবীর খুড়তুতো ভাই। অভিযোগ, তাঁদের কাছে খবর পেয়ে মৌসুমীদেবী এবং পিন্টুবাবু লোকজন নিয়ে বাড়িতে গিয়ে রাজাকে মারধর করেন। গভীর রাতে বন্ধুরা রাজাকে এক বন্ধুর বাড়িতে শুইয়ে দিয়ে আসেন। পরে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন। ভোরে রেল রিভার্স লাইনে তাঁর দেহ মেলে।
তার কিছুক্ষণ আগে রাজার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মেলে। যদিও পোস্টটি রাজারই লেখা কি না, তা নিয়ে রাজার পরিজনরা সন্দেহ জানান। তদন্তকারীদের দাবি, রাজার ফোনের শেষ টাওয়ার লোকেশন ছিল তারাপুকুরের কাছেই বেল্টিং বাজারে।
দিন কয়েক আগে পাপান এবং রিন্টু গ্রেফতার হন। তাঁরা আপাতত পুলিশ হেফাজতে। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, পাপান-রিন্টুর পক্ষ নিয়ে রাজাকে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন ভোলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy