কলকাতায় চিকিৎসা করানোর জন্য স্ত্রীকে উত্তরপ্রদেশ থেকে নিয়ে এসেছিলেন ডোমজুড়ের অঙ্কুরহাটির একটি জুতো কারখানার শ্রমিক কমলেশ যাদব। স্ত্রীর সঙ্গেই এসেছিলেন কমলেশের ভাই, ভগ্নীপতি এবং ছেলে। কিন্তু বুধবার ভোরের আগুন কেড়ে নিল তিন জনের প্রাণ। কোনওক্রমে বেঁচে গিয়েছেন কমলেশ ও তাঁর স্ত্রী।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম ঝাপ্পু যাদব (২৪), জয়প্রকাশ যাদব (৩০) এবং অভিষেক যাদব (১৩)। তিন জনেরই বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। আহতদের আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। পুলিশ কারখানার মালিককে আটক করেছে। একইসঙ্গে ওই কারখানার ম্যানেজার এবং নিরাপত্তারক্ষীকেও আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জুতো কারখানার গুদামের দোতলার একটি অংশকে অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হত। সেখানেই থাকতেন শ্রমিক কমলেশ যাদব। তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর স্ত্রী ইন্দুদেবী, ভাই ঝাপ্পু, ভগ্নীপতি জয়প্রকাশ এবং ছেলে অভিষেক কমলেশবাবুর কাছে আসেন। তাঁদের ওই কারখানাতেই রাখা হয়েছিল। দোতলায় ছিলেন জয়প্রকাশ, ঝাপ্পু এবং অভিষেক। তিন তলায় ছিলেন কমলেশ এবং ইন্দুদেবী।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, নীচের তলার সিঁড়ির ঘরের পাশে বিদ্যুতের মেন সুইচ থেকেই আগুন লাগে। ভোর ৪টে ৫ মিনিট নাগাদ আগুন লাগার খবর আসে। আলমপুর, বালি, উলুবেড়িয়া এবং হাওড়া থেকে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে তিন তলা থেকে ঝাঁপ দেন কমলেশের স্ত্রী ইন্দুদেবী। তাঁর পা ভেঙে যায়। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন কমলেশ। ঝাপ্পু, জয়প্রকাশ এবং অভিষেক বের হতে পারেননি। চিৎকার শুনে অন্য কারখানা থেকে রাতের শিফটের কর্মীরা ছুটে আসেন। তাঁরাই পুলিশ ও দমকলে খবর দেন। পুলিশ এসে কমলেশ ও তাঁর স্ত্রীকে আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠায়। দোতলার ঘর থেকে ঝাপ্পু, জয়প্রকাশ ও অভিষেকের দেহ উদ্ধার হয়।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, মৃতদেহগুলিতে আগুনে পুড়ে যাওয়ার কোনও চিহ্ন নেই। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়েই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান। কারখানার মালিককে জেরা করছে পুলিশ।