শুরু: জাঙ্গিপাড়ায় চলছে আলু কেনা। ছবি: দীপঙ্কর দে
তবে আলু কেনা শুরু হলেও গত কয়েকদিনে মাত্র ৩০-৩২ জন চাষি আলু বিক্রি করতে এসেছেন সমবায়ে। চাষিদের কম আসা নিয়ে স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের আলু কেনার উদ্যোগ নিয়ে সংশয় রয়েছে চাষিদের। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তার উপর যে পরিমাণ আলু এ বার হয়েছে, তার কতটা আলু কিনে উঠতে পারবে সরকার তা বোঝা যাচ্ছে না!’’
রাজ্যে হুগলিই সব চেয়ে বেশি আলু উৎপাদক জেলা। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী এ বার মোট ১১ হাজার টন আলু কেনা হবে এই জেলায়। কিন্তু বাস্তব ছবি হল, চলতি মরসুমে কৃষি দফতরের হিসাব অনুয়ায়ী আলুর উৎপাদন ১ কোটি ২০ লক্ষ টন ছুঁতে যাচ্ছে। এই হিসাব বাস্তবে মিললে এই মরসুমের মতো আলুর উৎপাদন অতীতে কোনওদিন হয়নি রাজ্যে। আলুর দাম তলানিতে ঠেকতেই রাজ্য সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নামে। চাষির কাছ থেকে আলু সহায়কমূল্যে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই আলু স্কুলের মিড-ডে মিল এবং আইসিডিএস সেন্টারগুলিকে সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তে খোদ চাষিরাই ধন্দে। তাঁদের বক্তব্য, সরকার যখন উদোযোগী হল তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কেন না আলু পচনশীল। তাই হিমঘরগুলিতে আলু রাখার কাজ এরই মধ্যে প্রায় শেষ। হুগলিতে হিমঘরের সংখ্যা ১৪২টি। তার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ জায়গাই আলু ভরে গিয়েছে। সহায়কমূল্যে সরকারকে আলু বিক্রির ভরসায় চাষিরা অপেক্ষা করেননি। আর এটা মাথায় রেখেই, কৃষি দফতর হিমঘরের উপর ভরসা না করে আলু সরাসরি সমবায় সমিতিগুলির মাধ্যমে কিনে তা স্কুলের মিড-ডে মিলে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তাতেও কতটা উপকার হবে তা নিয়েই সন্দেহে চাষিরা।
তারকেশ্বরের এক আলু চাষি বলেন, ‘‘এ বার এক বিঘে জমিতে আলু চাষ করতে ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর আলু বেচে পেয়েছি বড়জোর ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। বিঘেতে ক্ষতি হয়েছে গড়ে ৮ হাজার টাকা। অথচ সরকার এক কুইন্টাল আলু ৪৬০ টাকায় কিনছে। সরকার আরও আগে উদ্যোগী হলে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যেত।’’
রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর অবশ্য দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকেই সরকারি আলু কেনায় গতি এসেছে। এ ফলে চাষিরা তাঁদের অবস্থা অনেকটাই সামাল দিতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy