Advertisement
E-Paper

গৃহ-নিভৃতবাসে পাঠাতে নাজেহাল হচ্ছে প্রশাসন

যাঁরা গৃহ-নিভৃতবাসে থাকবেন, তাঁদের উপরে কড়া নজরদারি চালানো হবে। 

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০১:১১
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরছেন। সরকার চাইছে, তাঁদের গৃহ-নিভৃতবাসে রাখতে। কিন্তু গ্রামে ঢুকতে বহু ক্ষেত্রে তাঁরা বাধার মুখে পড়ছেন। তাঁদের নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে হাওড়া জেলা প্রশাসন। অশান্তি হচ্ছে। পুলিশ নিয়ে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হচ্ছে প্রশাসনিক আধিকারিকদের।

এই অবস্থায় সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্রে বাড়ানো হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। সে জন‌্য বহু স্কুল অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে গ্রামবাসী এবং শিক্ষকেরা একযোগে স্কুলকে নিভৃতবাস কেন্দ্র করা যাবে না বলে দাবি করেছেন। শ্যামপুরে একটি স্কুলের সামনে গ্রামবাসীরা বাঁশের বেড়া দিয়ে তালা মেরে দিয়েছেন। সমস্যা মেটাতে গ্রামে গ্রামে সচেতনতা শিবির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, যে সব এলাকায় সমস্যা দেখা দেবে সেখানে ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের উদ্যোগে সচেতনতা শিবির করে গৃহ-নিভৃতবাসে যে ক্ষতি নেই, তা গ্রামবাসীদের বোঝানো হবে। যাঁরা গৃহ-নিভৃতবাসে থাকবেন, তাঁদের উপরে কড়া নজরদারি চালানো হবে।

রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, তামিলনাড়ু, দিল্লি এবং মহারাষ্ট্র এই পাঁচ রাজ্য বাদে অন্য রাজ্যগুলি থেকে যাঁরা ফিরবেন, তাঁদের মধ্যে উপসর্গহীন সকলেই গৃহ-নিভৃতবাসে থাকবেন। যাঁদের উপসর্গ আছে, তাঁদেরই শুধুমাত্র সরকারি নিভৃতবাসে রাখা হবে। সেখান থেকে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হবে। যদি ফল ‘নেগেটিভ’ আসে, তখন তাঁদের গৃহ নিভৃতবাসে পাঠানো হবে। যাঁদের ফলাফল ‘পজ়িটিভ’ হবে, তাঁদের করোনা হাসপাতালে পাঠানো হবে। আর ওই পাঁচটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরবেন, তাঁদের সবাইকে রাখা হবে সরকারি নিভৃতবাসে। কিন্তু এই নিয়ম ওলটপালট হয়ে গিয়েছে কার্যকর করতে গিয়ে। পাঁচটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ রাজ্য বাদ দিয়ে অন্য রাজ্য থেকে যে সব পরিযায়ী শ্রমিক আসছেন, গ্রামে ঢুকতে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসন, পুলিশ এবং পঞ্চায়েতের নেতারা গিয়েও গ্রামবাসীদের বোঝাতে পারছেন না। ফলে, অনেক ক্ষেত্রে যাঁদের ঘরে নিভৃতবাসে থাকার কথা তাঁদের সরকারি নিভৃতবাসে এনে রাখতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এত বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকদের সবাইকে যদি ১৪ দিন সরকারি নিভৃতবাসে রাখা হয়, তা হলে তাঁদের দেখভাল করা, নার্স এবং চিকিৎসক রাখা, তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা-সব মিলিয়ে বিপুল আয়োজনের প্রয়োজন। রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য, তাঁদের বাড়িতে রেখে সেই ভার কিছুটা লাঘব করা। কেউ যদি গৃহ-নিভৃতবাসে থাকার পর করোনায় আক্রান্ত হন, তা হলেও তাঁর সংস্পর্শে আসবেন শুধু বাড়ির লোকজন। এই সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় সংক্রমণের সম্ভাবনাও আনুপাতিক হারে কম থাকবে।

এ দিকে, উলুবেড়িয়ার বাণীতবলায় একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যে সব পরিযায়ী শ্রমিককে রাখা হয়েছে তাঁদের একাংশ বৃহস্পতিবার রাত থেকে সুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখালেন। তাঁদের অভিযোগ, সেখানে খাবার, শৌচালয়, বিছানা-সহ কোনও কিছুরই সু-বন্দোবস্ত নেই। শেষ পর্যন্ত উলুবেড়িয়া-২ ব্ল‌ক প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ থামে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।

Coronavirus COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy