তৃষ্ণা: হাওড়া পুরসভার দাবি, দ্রুত বদলাবে এই ছবি। নিজস্ব চিত্র
পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের ক্ষমতা বাড়ানো হবে আরও। কিন্তু সে কাজ শেষ হতে এখনও যথেষ্ট দেরি। অথচ হাওড়ার সংযুক্ত এলাকার জলসঙ্কট নিয়ে সমস্যায় বাসিন্দারা। তাই আপাতত শ্রীরামপুর এবং বালি জলপ্রকল্প থেকে জল আনিয়ে ঘাটতি মেটাবে হাওড়া পুরসভা। হাওড়ার পুর কর্তাদের দাবি, পুজোর আগেই সংযুক্ত এলাকার জলসঙ্কট দূর করতে এই পরিকল্পনা।
পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প থেকে জল সরবরাহের ব্যবস্থা নেই পুরসভার ৪৫ থেকে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে। এর জন্য প্রতি গ্রীষ্মে চরম জলসঙ্কটে ভুগতে হয় ওই ওয়ার্ডগুলির বাসিন্দাদের। গত ২০ বছর ধরে এমনটাই চলে আসছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০০৬ সালে পুরসভায় বাম বোর্ড ক্ষমতায় থাকাকালীন ওই এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের জন্য একটি প্রকল্প শুরু হয়। জেএনএনইউআরএম-এর সেই প্রকল্পে কয়েক কোটি টাকা খরচ হলেও পাঁচ বছরেও কাজ শেষ হয়নি। ফলে জলসঙ্কট থেকেই গিয়েছে।
এই তথ্য সামনে আসার পরে গত মে মাসে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দেন। এর পরেই সংযুক্ত এলাকাগুলিতে জল সরবরাহ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় হাওড়া পুরসভা। হাওড়া পুরসভার বরো ছয়ের চেয়ারম্যান এবং পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের এগজিকিউটিভ অ্যাডভাইসর সৈকত চৌধুরী জানান, ওই এলাকায় মোট সাড়ে ৩ মিলিয়ন গ্যালন জল প্রয়োজন। এ জন্য সাড়ে ৪ মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন যে জলপ্রকল্প তৈরি হয়েছে শ্রীরামপুরে, সেখান থেকে আড়াই মিলিয়ন গ্যালন এবং বালির জলপ্রকল্প থেকে আড়াই মিলিয়ন গ্যালন অর্থাৎ মোট পাঁচ মিলিয়ন গ্যালন জল পাইপলাইনের মাধ্যমে সালকিয়ার ভূগর্ভস্থ জলাধারে নিয়ে আসা হচ্ছে। সালকিয়ার ওই জলাধার থেকে সংযুক্ত এলাকায় যে সাড়ে ৩ মিলিয়ন গ্যালন জল প্রয়োজন তা সরবরাহ করা হবে। তাতে জলসঙ্কট অনেকটাই মিটে যাবে।
সৈকতবাবু বলেন, ‘‘বালি থেকে সালকিয়া পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে। তা শেষ হয়ে গেলে পুজোর আগেই ওই জল পাম্পের সাহায্যে আরতি কটন মিল ও গড়ফার দু’টি ওভারহেড ট্যাঙ্কে জমা হবে। সেখান থেকে সেই জল হাওড়ার সংযুক্ত এলাকায় সরবরাহ করা হবে।’’
কিন্তু প্রশ্ন হল, সংযুক্ত এলাকার বহু অলি-গলিতে পাইপলাইন নেই। সে ক্ষেত্রে সরবরাহ হবে কী ভাবে? সৈকতবাবু বলেন, ‘‘এটা একটা বড় সমস্যা। তবে আমরা সে কাজও দ্রুত শুরু করব।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের ভিতরে যে ১০ মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন জলপ্রকল্প তৈরির কাজও শুরু হচ্ছে। সেই কাজ করছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। সংস্থার অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার সমীরণ মল্লিক বলেন, ‘‘দরপত্র ডাকার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার অপেক্ষা। আশা করা যায়, দু’বছরের মধ্যে ওই জলপ্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। পুরসভা সূত্রে খবর, মোট ১০০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে ৭০ কোটি টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বাকি টাকা দেবে হাওড়া পুরসভা। ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ের টাকা এসে গিয়েছে।
হাওড়া পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধু ১০ মিলিয়ন গ্যালনের জলপ্রকল্প নয়, এই ধরণের আরও একটি বড় জলপ্রকল্পের কথা বিবেচনা করে বড় ব্যাসার্ধের পাইপ বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তাতে পরবর্তী জলপ্রকল্প তৈরি করার খরচ অনেকটাই কমে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy